ইমাম হোসাইন (আঃ) কে চিনল না উম্মতে মোহাম্মদী। তাঁবুর আলো বন্ধ করে দিলেন  ইমাম হোসাইন। হোসাইন

ইমাম হোসাইন (আঃ) কে চিনল না উম্মতে মোহাম্মদী। তাঁবুর আলো বন্ধ করে দিলেন ইমাম হোসাইন। হোসাইন

বলেন, হে সাথীরা চলে যাও তোমাদের মাতৃঘরে। আমরা আবদ্ধ। ফোরাতের তীর শত্রুর দখলে।

ইমাম হোসাইনের তাঁবুর সাথীরা বলল, মুসলমান তো তারাই যারা অন্যকে বিপদে ফেলে চলে যায় না। তাই আমরা আপনকে ছেড়ে চলে যাব না।

হে আওলাদে রাসূল (সা.), হে বীরের ছেলে, বীর হোসাইন, আমরা প্রতিহত করব শত্রুদের; জীবন বিলিয়ে দেব। থাকব জীবনভর রাসূলের দলে। সবটুকু ভালোবাসা বিলিয়ে দেব রাসূলের পরিবারের জন্য। আপনার সঙ্গে জান্নাতে যেতে প্রস্তুত।

রাত বেড়েই চলছে। চাঁদ যেন রক্তের আলো বিলাচ্ছে চারপাশে। মোনাজাতে কাঁদছেন হোসাইন। একদল রুকুতে অন্যরা সিজদায় লুটিয়ে কাঁদছে।

শুক্রবার সকাল। হোসাইনি তাঁবুতে খাবার নেই। পানিও নেই। পানির অভাবে অন্তর শুকিয়ে যাচ্ছে। ছোট ছেলেমেয়েরা কাঁদছে পানির অভাবে। হাহাকার চলছে তাঁবুতে।

পানির জন্য এত কষ্ট নবী পরিবারের। পানির অভাবে হোসাইনের ছয় মাসের শিশু আলি আজগরের কান্না বন্ধ হয়ে গেছে। কাঁদতে পারে না।

ওগো! আমার আলী আজগরকে একটু পানি পান করিয়ে আন। পানির অভাবে সে খুব কষ্ট পাচ্ছে। একটু পানি চাই।

হে ফোরাতের পানি দখলকারী! ভুলে যেও না তোমরা আমার নানার উম্মত। আমি তার নাতি হোসাইন। আমি নবী পরিবারের সদস্য।

হঠাৎ তীর আসতে শুরু করল হোসাইনের দিকে। তীর আলি আজগরের বুকে বিদ্ধ হল। হোসাইনের কোল রক্তে ভিজল। আহ! ফিনকি দিয়ে তাজা রক্ত বের হচ্ছে।

কাতর কণ্ঠে হোসাইন বলেন, ওহে ওই ইয়াজিদ বাহিনী? কী দোষ করেছে আমার ছয় মাসের সন্তান? কেন তাকে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছ?

রণক্ষেত্র কারবালা। শত্রুরা ভুলে গিয়েছে রাসূলের ভালোবাসাকে। অন্তরে মায়া নেই হোসাইনিদের জন্য। মুনাফিক মুসলিম ঝাঁপিয়ে পড়ল সত্যের বিরুদ্ধে। রক্তে লাল কারবালা। নেই এক ফোঁটা পানি। রক্তপিপাশু জালিমের দল থেমে নেই।

চারদিকে রক্তের বন্যা। চারদিকে লাশের মিছিল। আক্রমণ শুরু হল হোসাইনের ওপর। তীর, বর্শা, তরবারির আঘাত বইছে হোসাইনের শরীর মোবারকে। চেহারা মোবারকে রক্তের জমাট। দাড়ি ভিজে গেল রক্তে। শরীর থেকে অঝোর ধারায় বইছে রক্তের ঝরনা।

আহ কী করুণ পরিস্থিতি। নামাজের সময় হল। দু’রাকাত নামাজ পড়তে দাও হে ইয়াজিদ বাহিনী। তীর বিদ্ধ হোসাইন সিজদায় লুটিয়ে পড়ল। ডাকছে প্রভুকে। নানা মোহাম্মাদকে।

কারবালার জমিনে লুটিয়ে পড়েন বীর হোসাইন। নিভে গেল সত্যের প্রদীপ। জান্নাতের যুবকদের সর্দার। দেহ থেকে মস্তক বিছিন্ন করা হল হোসাইনের।

ইমাম হোসাইন উম্মতে মুহাম্মদের জন্য বিলিয়ে দিলেন জীবন। আজ সেই হোসাইনের জীবনের মূল্য কি দিচ্ছি আমরা উম্মতে মুহাম্মাদী?

আল্লাহুমা সাল্লে আলা মোহাম্মদ ওয়ালা আলে মোহাম্মদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *