আশরাফুজ্জামান বাবুল স্যার এর আইডি থেকে সংগৃহীত : বিচারাধীন কোনো মামলার ব্যাপারে মন্তব্য করা কতোটা যৌক্তিক তা আমি জানি না, কারণ আমি আইনজীবী নই। তবে এদেশের একজন নাগরিক হিসেবে বাকস্বাধীনতা অধিকারী। সে হিসেবে কিছু কথা বলতেই পারি। আমি একই বিষয়ে আগে একটি পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটিতে প্রচুর লাইক কমেন্ট পড়েছিলো, শেয়ার হয়েছিলো তিনশতাধিক, আর কপিও হয়েছে কয়েক শ। এতে আমার তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলার কোনো কারণ নেই, কারণ লাইক কমেন্ট, কপি কিংবা শেয়ারের জন্যে আমি কখনোই পোস্ট করি না। পোস্ট করি কিছু বলার জন্যে। কিন্তু সেই বলাটা যদি বাহবা পর্যায়ে গিয়ে শেষ হয় তো আমার কষ্ট করে লেখাটাই পণ্ডশ্রম।
গত ১৮ মে নরসিংদী স্টেশনে ভোর সোয়া পাঁচটায় বেখাপ্পা পোশাকের এক তরুণীকে হেনস্তা করার ঘটনায় ২৯ তারিখ রাতে গ্রেপ্তার হওয়া ষাটোর্ধ্ব মারজিয়া আক্তার শেষপর্যন্ত তিন দিনের রিমান্ডে গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মর্মাহত হয়েছি। এক শিরিন আক্তার শেলী মেডাম ছাড়া তেমন কোনো আইনজীবী উনার পাশে দাঁড়াননি। ওই নামধাম না জানা কিশোরী ও তার সঙ্গীয় দুই যুবকের পক্ষে শো ডাউন করতে তথাকথিত হাতাকাটা নারীবাদীগণ নরসিংদীতে গিয়ে বহু কুর্দনমর্দন করে আসলেও স্থানীয়গণ সশরীরে কোনো প্রতিবাদ প্রতিরোধ করেননি। এটা অতিথিদের প্রতি স্থানীয়দের একটি সাধারণ ভদ্রতা হিসেবে বিবেচনা করলে প্রশ্ন আসে এখন ষাটোর্ধ্ব মার্জিয়ার পক্ষে কথা বলার জন্যে দশজন লোকও তো কোথাও জড়ো হয়নি! আইনজীবীর মাধ্যমে শুনেছি মার্জিয়ার বিরুদ্ধে পুলিশবাদী কেসের ধারা ও উনার বয়স বিবেচনায় রিমান্ড হওয়ার কথা নয়, তবুও হয়েছে। একদিন নয়, তিনদিন। এবং এই রিমান্ড শুনানি হয়েছে এজলাসে নয়, বিচারকের খাস কামরায়। ওখানে মার্জিয়ার আইনজীবী যুক্তিতর্ক করার যথেষ্ট সুযোগও পানিনি।
এই আমরাই ফেসবুকে ভাইরাল কইরা কেসটা বাজাইছিলাম।
আমরা কি জানি, এই মার্জিয়ার বয়স ষাট? আমরা কি জানি মার্জিয়ার তিনটি কনে সন্তান? আমরা কি জানি উনার স্বামী নেই? আমরা কি জানি উনার একটি কিশোরী মেয়ে ব্রেইন টিউমারের রোগী? আমরা কি জানি তিনি দীনহীন একজন অসহায় নারী? আমরা কি জানি তিনি সামান্য ঘটকালি করে ও চেয়ে চিন্তে নিজের সংসার ও মেয়ের চিকিৎসা চালান? আমরা কি জানি পুলিশের এসআই কর্তৃক আদালতে সাপ্লাইকৃত সিসিটিভি ফুটেজ পূর্ণাঙ্গ ছিলো না? আমরা কি জানি এজহারে উল্লেখিত অভিযুক্তদের মধ্যে মার্জিয়ার নামও নেই? তাকে আসামি করা হয়েছে ওরফের বেড়াজালে! মার্জিয়া অপরাধ করে থাকলে তার শাস্তি তাকে অবশ্যই পেতে হবে, তবে সেটা যেনো দোষানুরূপ হয়, কারো বা কোনো মহলের চাপে পড়ে জুলুম না হয়ে যায়!
আমি এফবিতে আমার ফ্যামিলি পিক পোস্ট করলে কতোজন পর্দার ব্যাপারে নসিহত করতে আসেন! এখন শালীনতার ব্যাপারে সতর্ক করা একজন মাকে কাঠগড়ায় দেখেও যারা চুপ, তারা যেনো আর কোনোদিন পর্দা নিয়ে কথা বলতে না আসেন!
লিখেছেন :