গাজীপুরের কালীগঞ্জে ফিল্মি স্টাইলে ইরাক প্রবাসী লাবু মিয়াকে অপহরণ করে নিয়ে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন অপহরণকারীরা। এই ঘটনায় অভিযোগের ২৪ ঘন্টার মধ্যে অপহৃতকে উদ্ধারসহ তিনজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় কালীগঞ্জ থানা পুলিশ। ভিকটিম প্রবাসী লাবু মিয়া টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর থানার গুহুলি গ্রামের মো. আমিনুর রহমানের ছেলে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার হামুরদিয়া গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের দুই ছেলে মো. দুলাল মিয়া, নাসিরউদ্দিন ও মেয়ে রাবেয়া বেগম। ঘটনায় জড়িত অপহরণকারী তিন ভাইবোনকে বুধবার দুপুরে গাজীপুর আদালতে প্রেরণ করেন পুলিশ।
এই ব্যাপারে বুধবার সাড়ে এগােরাটায় কালীগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মাহাতাব উদ্দিন থানা হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলন তিনি জানান, ইরাক প্রবাসী লাবু তাঁর বন্ধুর দেয়া মালামাল রাবেয়ার কাছে পৌছে দেয়ার জন্য কালীগঞ্জে আসলে তাকে ফিল্মি স্টাইলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এই বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর গাজীপুরের পুলিশ সুপার কাজী সফিকুল আলম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) উখিং মে এর নির্দেশনায় মোবাইল ট্যাকিংয়ের মাধ্যমে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে নরসিংদীর শিবপুর থানার হামুরদিয়া এলাকার উল্লেখিত অপহরণকারীর বাড়ি থেকে শিকল বাঁধা আহত অবস্থায় ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়। পরে ভিকটিমকে কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রো নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসার শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, লাবু মিয়া দীর্ঘদিন যাবত ইরাকে থাকেন। গত ১৭ মার্চ রোববার সে ছুটিতে দেশে আসলে প্রবাস কলিগ হাসান মিয়া তাকে কিছু মালামাল দিয়ে তার বোন রাবেয়াকে বুঝিয়ে দিতে বলেন। সেই সুবাধে তাঁর বন্ধুর বোন রাবেয়ার মালামাল নিয়ে বিমানবন্দর থেকে কালীগঞ্জ বাজার আসেন। সেখান থেকে রাবেয়ার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে মালামাল কোথায় রাখবো বললে রাবেয়া জানান আমি আসতেছি আপনি পাইলট স্কুল মাঠে থাকেন। তার কিছুক্ষণ পরেই লাবু মিয়া কিছু বুঝে উঠার আগেই রাবেয়া তার সহযোগী ৭/৮ জন নিয়ে অস্ত্রের মুখে তাকে জিম্মি করে। পরে তার গাড়িতে থাকা স্বর্ণ অলংকারসহ চার লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুঠে তাকে হায়েজ গাড়িতে তুলে নরসিংদীর একটি নিরব স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে তাকে শিকল দিয়ে হাত- পা বেঁধে বেড়ধক মারধর করে। এরপর ১৮ মার্চ সোমবার সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে অপহরণকারীরা ভিকটিমের বাবার মোবাইলে ফোন করে ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা না দিলে এবং পুলিশ প্রশাসনসহ কাউকে অবগত করলে তাকে হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দেয়ার অভিযোগ রয়েছে ওই
অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে। এই সংক্রান্ত বিষয়ে ভিকটিমের ছোট ভাই মামুন মিয়া বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় গত ১৮ মার্চ রাতে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের পর রাতে কালীগঞ্জ থানা পরিদর্শক (অপারেশন) রাজীব হোসেন, এসআই সাইফুল ইসলাম, এসআই ফজলুল হকসহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে নরসিংদীর শিবপুর থানার হামুরদিয়া অপহরণকারীর বাড়ি থেকে ঐ অপহৃতকে উদ্ধার করে।
এই সময় পুলিশ লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকৃতরা হলেন নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার হামুরদিয়া গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের দুই ছেলে মো. দুলাল মিয়া, নাসিরউদ্দিন ও মেয়ে রাবেয়া বেগম। অপহরণকারী তিন ভাইবোনকে বুধবার দুপুর গাজীপুর আদালতে প্রেরণ করেন পুলিশ।