প্রথম বাংলা - ঘুষ, দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার ১৩ নং দত্তের বাজার ইউনিয়নের ভূমি সহকারি মো: মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না ।
এতে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন ওই ভূমি সহকারি কর্মকর্তা।
সম্প্রতি ওই ভূমি সহকারির ঘুষ লেনদেনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে ভুক্তভোগীসহ সচেতন মহলে। ওই ভিডিওতে ভূমি সহকারি মিজানুর রহমান এক ভূমি মালিককে বলেন- ‘পাঁচ হাজার টাকায় জমির খারিজ হবে না। এভাবে কাজ করলে আমাকে ভিক্ষা করে খেতে হবে।’ ভূমি সহকারি কর্মকতা চাহিদা মত ঘুষের টাকা না হওয়ায়। এরপর ওই টাকা ভূমি মালিককে ফেরত দিয়ে দিতে দেখা যায়। শেষ এই ঘুষের টাকা গ্রহন করে আরও লাগবে বলে দাবি করে ভিডিওতে।
এর আগে গত বছরের মার্চে বিতর্কিত এই ভূমি সহকারির বিরুদ্ধে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নে দায়িত্ব পালনকালে অনিয়ম ও দুনীর্তির অভিযোগ উঠে। পরে তাকে গফরগাঁও উপজেলায় বদলী করা হয়।
ভুক্তভোগীরা আরও জানায়, বিতর্কিত কর্মকান্ডে ঈশ্বরগঞ্জ থেকে মিজানুর রহমান বদলী হয়ে দত্তেরবাজার ইউনিয়নে যোগদান করে জড়িয়ে পড়েন একই ধরনের অনিয়মে। এতে ক্ষুব্ধ নিজাম উদ্দিন, জুয়েল আকন্দসহ আরও অনেকেই গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে গত বছরের ২ আগষ্ট জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করলে ঘটনাটি তদন্ত করেন সংশ্লিষ্ট সহকারি কমিশনার জান্নাতুল মাওয়া।
তদন্ত কর্মকর্তা জান্নাতুল মাওয়া জানান, অনেক আগেই এই তদন্ত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট দফতরে জমা দেওয়া হয়েছে। বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবেন।
ভুক্তভোগীরা আরও জানায়, দুই দফা অভিযোগে কোন ব্যবস্থা না হওয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুলের সুপারিশকৃত অপর একটি অভিযোগ চলতি বছরের ১১ মে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে দায়ের করেন এলাকাবাসি। এরপর গত ২২ মে ওই অভিযোগটি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্ট সিনিয়র সহকারি কমিশনার ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত মিজানুর রহমানকে অন্যত্র বদলী জন্য জেলা প্রশাসনে চিঠি দেন। সেই সঙ্গে অভিযোগটি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন এই কর্মকর্তা।
ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসনে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সর্বশেষ অবস্থা তারা বলতে পারবেন।’
কিন্তু র্দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ওই ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এখনো কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি বলেও জানান অভিযোগকারি মঈন উদ্দিন, শফিকুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাস সহ আরও অনেকেই।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি এবং রাজস্ব শাখার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) মো: মেহেদী হাসান বলেন, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের চিঠির প্রেক্ষিতে অভিযোগটি তদন্তের জন্য দ্রুত তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে। সেই সঙ্গে পূর্বের তদন্ত প্রতিবেদনটি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও ভিডিও ভাইরালেরও বিষয়টি খতিয়ে দেখতে জেলা প্রশাসক মহোদয় নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
তবে অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ১৩ নং দত্তের বাজার ইউনিয়নের ভূমি সহকারি মো: মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ভাইরাল ভিডিও প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভিডিওটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র ও ভিডিও টি দত্তে বাজার ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কি নাকি এ প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন আমার অফিসে।সেই পূর্বে কর্মরত ঈশ্বরগঞ্জ উচাখিলা ইউনিয়ন ভূমি থাকার সময় অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে কিছু বলতে চাননি।
এ বিষয়ে দত্তে বাজার ইউনিয়ন বাসিন্দা একজন ভুক্তভোগী প্রতিবেদকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন যে, সরকার দুর্নীতি বন্ধ করা জন্য সকল কিছু অনলাইন করতে শুরু করেছে তারপরেও ঘুষ ছাড়া যদি ভূমি অফিস কাজ না হয় তাহলে এই অনলাইন করে লাভ কি বলেন। তিনি আরও বলেন সরাসরি ঘুষে টাকা নিয়ে তর্ক করছে নায়েব মিজানুর রহমান।এখন এটার ভিডিও ছিল বলে সবাই দেখছে পাইছে। ওনার অফিসে টাকা ছাড়া কোন কাজ হয় না। আমরা ভুক্তভোগীরা কমিশনা স্যার, ডিসি স্যার, ইউএনও স্যারসহ অনেক কাছে অভিযোগ দিছি কিসের জন্য এটা বিচার করছে না, এটা আমরা জানি না । আমরা এটা বিষয়ে সঠিক বিচার চাই।