সত্যের খোঁজে আমরা
পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার ডাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ রায়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্পের সরকারি অর্থ আত্মসাৎসহ সীমাহীন দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছারিতা ও স্বজনপ্রীতিসহ নানান অভিযোগ তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন ও অপসারনসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্থানীয় জনগন। এসময় চেয়ারম্যানের দূর্নীতর দুই সহযোগী ৫ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য হানিফ গাজী প্যানেল চেয়ারম্যান-১ ও ১ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলাম সরদারকে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনতে উপজেলা ও জেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রতি দাবি জানান।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর-২০২৩ ইং) তারিখ সকাল ১০ টার সময় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে ৬নং ডাকুয়া ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণের আয়োজনে উল্লেখিত ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনের আগে গত (০৬ আগস্ট-২০২৩ ইং) তারিখ চেয়ারম্যান বিশ্বজিত রায়, ইউপি সদস্য হানিফ গাজী ও ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে পাঁচ জন স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রানী সম্পদ মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রধান কার্যালয় ঢাকা ও পটুয়াখালী শাখা, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ সংশ্লিষ্ট মোট ১১ দপ্তরে দূর্নীতির বর্ননা, প্রমানাদি দাখিল করেছেন। পরে জেলা প্রশাসক নুর কুতুবুল আলম তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহিউদ্দিন আল- হেলালকে নির্দেশ প্রদান করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মো: মস্তফা কামাল উল্লেখ করেন, গলাচিপা উপজেলার ০৬ নং ডাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ রায় কুখ্যাত দুর্নীতিবাজ, প্রকল্প অর্থ আত্মসাৎকারী (ওভারলেপিং) এর মহা নায়ক। তিনি পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান -১ মো: হানিফ গাজীসহ অন্য সদস্য জহিরুল ইসলামসহ অন্যান্য সদস্যদের সহযোগিতায় চেয়ারম্যানের দ্বায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি ও প্রকল্পের অর্থ লুটপাট সহ নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছেন। মস্তফা কামাল লিখিত বক্তব্য আরও বলেন, ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থ বছরে প্রকল্প কর্মকর্তার যোগসাজশে একই স্থানে ভিন্ন ভিন্ন নামে একাধিক প্রকল্প দেখিয়ে বরাদ্দ আত্মসাৎ, গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (টি, আর, কাবিখা-কাবিটা) ৪০ দিনের কর্মসূচিতে শ্রমিক দ্বারা প্রকল্পের কাজ করানোর বিধান থাকলেও চেয়ারম্যান নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে ভেকু মেশিনে কাজ করিয়েছেন। শ্রমিক তালিকায় যে নাম আছে ও মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়েছে সেগুলো চেয়ারম্যানের নিজস্ব লোক, আত্নীয় স্বজনের নাম দিয়ে তৈরি করা। যার মোবাইল সীম গুলো চেয়ারম্যানের জিম্বায় রেখে বরাদ্দের লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়াও (এজিএসপি), ভুমি হস্তান্তর কর ১%, খেয়াঘাট ইজারা বরাদ্দ, উন্নয়ন সহায়তা তহবিল, কোভিট-১৯ উপলক্ষে বরাদ্দ, নলকূপ স্থাপনে মোটা অংকের টাকা উত্তোলন, হাট ইজারার টাকা, এমপির বরাদ্দ, এডিপি বরাদ্দ, ট্রেড লাইসেন্স দূর্নীতি, ভিডব্লিউবি/ভিজিডি কার্ড ও জেলেদের মানবিক সহায়তা প্রদানে অর্থনৈতিক লেনদেন ও চাল বিতরনের সময় অনিয়মসহ টাকা উওোলন, ইউনিয়ন পরিষদ সংষ্কারে অনিয়ম করে বরাদ্দ আত্মসাৎ, বিভিন্ন মন্দিরে সিসি টিভি নির্মান বরাদ্দ আত্মসাৎ, নিজের বাড়ির মন্দিরের ঘাটলা নির্মাণের স্কীম দিয়ে টাকা আত্মসাৎ, ইউনিয়ন পরিষদের নকশা পরিবর্তন করে নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে পরিষদের নিচে গোডাউন নির্মান সহ একাধিক অভিযোগ তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মো: জাকির হোসেন মোল্লা, মো: মোস্তাফিজ খন্দকার ও রুহুল আমীন মোল্লা বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ রায়, তার সহযোগী প্যানেল চেয়ারম্যান-১ হানিফ গাজী ও ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলাম এর অপসারনসহ শাস্তির দাবি জানান।
অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ রায় বলেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহলের ইন্ধনে অভিযোগকারীরা হেয় প্রতিপন্ন করতে তার বিরুদ্ধে লেগেছেন। তিনি কোনো ধরনের অনিয়ম, দুর্নীতি কিংবা সরকারি অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত নন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মহিউদ্দিন আল হেলাল বলেন, অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে এ তদন্ত কমিটির কাজ এখনো চলমান রয়েছে বলে জানান।