গাউসুলআজম মাইজভাণ্ডারী (ক.)’র কারামত উকিলবাবুর প্রেরিত কলা রাখিয়া দুগ্ধ ফেরৎ

গাউসুলআজম মাইজভাণ্ডারী (ক.)’র কারামত উকিলবাবুর প্রেরিত কলা রাখিয়া দুগ্ধ ফেরৎ


———————————————————-
ফটিকছড়ি থানা, নাম অতি সুন্দর মাইজভান্ডার গ্রাম এক, তাহার ভিতর।
শুভ কাজে শুভ যুগের দোয়া করি আল্লাহ,
সেই দেশে জন্মাইল শাহ আহমদ উল্লাহ্।
সুপণ্ডিত আরবীতে মুখস্ত কোরান,
ফকির মাওলানা বলে বিস্তর সম্মান।
বাল্যবধি স্বধর্মেতে ছিলেন নিষ্ঠাবান,
করিতেন জগতের সতত কল্যাণ।
নিরপেক্ষ লোক তিনি প্রসিদ্ধ ফকির,
মনুষ্য কুলেতে হন সকলের পীর।
মানবের উপকার করিবার তরে,
সততা প্রস্তুত ছিলেন প্রফুল্ল অন্তরে।
নানা জিলা হতে লোক আসিয়া তথায়,
ইচ্ছামত কার্যলভে তাঁহার কৃপায়।
দেশদেশান্তরে আছে বড় নাম তাঁহার,
সর্বলোকে ঘোষ যশঃ কীর্তি অনিবার।
লোকের মনের কথা জানিতেন তিনি,
নানা প্রকার গুণ ছিল অতি বড় জ্ঞানী।
লোভ লিপ্সা নাহি তাঁহার অন্তরে,
খেতে দিতেন অতিথিরে নানা উপাচারে।
শিষ্য সাগরিত আছে তাঁর ভিন্ন ভিন্ন স্থানে,
কার্য্যসিদ্ধি হয় সবার তাঁর নাম নিলে।
ফটিকছড়ির নববাবু উকিল সরকার,
জ্ঞাতিজৈষ্ঠ ভাই হয় সম্পর্কে আমার।
কার্যোপলক্ষে আমি সেই বাসায় ছিনু,
ফকিরের গুণ দেখি আশ্চর্য হইনু।
উকির বাবুর এক গাভী প্রসবিল,
বহুদুগ্ধ গাভী হইতে পাইতে লাগিল।
ভাগ্যক্রমে সেই সময় বাসাতে তাহার,
পাকিল কাবুলি কলা অতি চমৎকার।
তাহা দেখি নববাবু ভক্তি সহিতে,
দুগ্ধ কলা দিতে চাইলেন ফকির বাড়িতে।
কহিল মনের কথা কেরানীর ঠাই,
অদ্যকার দুগ্ধ সব তথা দিতে চাই।
কেরানী শুনিয়া তাহার মনে মনে ভাবে,
তিন সের দুগ্ধ দিলে ফকির নাহি খাইবে।
জনৈক বাহক দিয়া কলা দুই কান্দি,
এক সের দুগ্ধ দিল ভান্ড মুখ বান্দি।
ফকিরের কাছে গিয়া বাহক কহিল,
উকিল সরকার বাবু দ্রব্য পাঠাইল।
“এত দুধ নাহি খায়” ফকির কহিয়া,
কলা রাখি দুগ্ধ সব দিলেন ফিরাইয়া।
বলিলেন, ফকির এত দুগ্ধ নাহি খায়,
বুঝিতে না পারি তার কিবা অভিপ্রায়।
তদন্ত করিয়া জানি কেরানীর কথা,
পরদিন পাঠাইল সবদুধ তথা।
ফকির সন্তুষ্ট হইয়া রাখে সেই দুগ্ধ,
চক্ষে তাহার গুণ দেখি হইলাম মুগ্ধ।

সংগ্রহ :- গাউসুলআজম মাইজভাণ্ডারীর জীবনী ও কেরামত গ্রন্থ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *