গৃহবধূকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা

গৃহবধূকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক, মর্নিং বিডি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল থানাধীন মোসা:সিমা বেগম (৩২) নামের এক গৃহবধূকে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।ওই গৃহবধূ নাচোল থানাধীন ঘিওন মাজা গ্রামের মোঃ মুক্তারুল ইসলাম(৩৫)এর স্ত্রী। প্রায় ১৬ বছর আগে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন মুক্তারুল-সীমা দম্পতি। স্বামী একজন দিনমজুর তাই দুই সন্তানের জননী অভাব অনটনের মাঝে জীবন যাপন করছেন দীর্ঘদিন যাবত। অভাব অনটনের কারণে চাকরির সন্ধান করছেন অনেকদিন থেকেই। এরই মাঝে পরিচয় হয় স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি মোঃ তমিজ উদ্দিনের সাথে। তমিজ উদ্দিন আশ্বস্ত করেন টাকা খরচ করলে নাচোল উপজেলা পরিষদে চাকরির ব্যবস্থা করে দিবেন। বিষয়টি সীমা-মুক্তারুল দম্পতি বাড়িতে আলোচনা করেন এবং এক পর্যায়ে চাকরি পাওয়ার আশায় টাকা দিতে রাজি হন। ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী মুক্তারুল ইসলাম জানায়, বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে এবং সোনার গহনা বিক্রি করে নগদ ৪ লক্ষ টাকা প্রদান করা হয় তমিজউদ্দীনকে। টাকা পাওয়ার পর থেকেই তমিজ উদ্দিন বিভিন্ন ধরনের টালবাহানা করতে থাকে। তালবাহানা করে প্রায় ৪ বছর অতিবাহিত হয়ে গেলে চাকরির আশা ছেড়ে দেয় আমার স্ত্রী সীমা। এবং তমিজ উদ্দিনের কাছে চাকরির জন্য দেয়া টাকা ফেরত চাওয়া হয়। এরপর (৫অক্টোবর) বুধবার টাকা ফেরত দেবে বলে আমার স্ত্রী সীমাকে বেলা ১১ টার দিকে নাচোল উপজেলার সামনে আসতে বলেন। তমিজ উদ্দিনের কথাই বিশ্বাস করে আমার স্ত্রী সীমাকে বুধবার বেলা ১১ টার দিকে নাচোল উপজেলার সামনে রেখে আসি। এরপর ভুক্তভোগী গৃহবধূ সীমা জবানবন্দিতে বলেন, আমি সেখানে অপেক্ষা করছিলাম এবং তমিজউদ্দিনকে ফোন করে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছিলাম এক পর্যায়ে একটি মাইক্রোবাস এসে আমার সামনে থামে এবং আমাকে মাইক্রোবাসের ভেতর উঠিয়ে নিয়ে আমার চোখ, মুখ,হাত বেঁধে ফেলে। পরে মাইক্রোবাসে করে আমাকে কোথায় নিয়ে যায় আমি কিছুই বলতে পারব না। সারাদিন আমার প্রতি মাইক্রোবাসে থাকা ৬ জন ব্যক্তি নির্যাতন করতে থাকে এবং বলে টাকা ফেরত নিবি, থাম তোর ব্যবস্থা করছি। তোকে মেরে ফেললে তো সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এই কথা বলে আমার পুরো শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে একটি জঙ্গলে ফেলে পালিয়ে যায়।ওই রাস্তা দিয়ে এক ভ্যানচালক যাচ্ছিলেন। আমাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে নাচোল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। বর্তমানে তিনি বার্ন ইউনিটে ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। কর্তব্য রত চিকিৎসক জানাই শরীরের আশি শতাংশই পুড়ে গেছে। আমরা সার্বক্ষণিক নজরদারি দেখেছি। তার চিকিৎসায় কোন রকমের ঘাটতি নেই। গৃহবধুর স্বামী বলেন আমরা আচল থানায় অভিযোগ দিতে গিয়েছিলাম প্রথমে অভিযোগ নিতে অস্বীকার করলেও রাত নয়টার দিকে অভিযোগ নেবে বলে থানায় ডেকেছে।এ বিষয়ে জানতে নাচোল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মিন্টু রহমানের মুঠোফোনে ফোন দেওয়া হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এর ফলে তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *