দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে অংশগ্রহণমুলক অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিকল্প নেই। আজ ২২ জুলাই ২০২৩ইং, শনিবার বেলা ১১টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইটে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র, সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে ও দেশদ্রোহী মোসাদ এজেন্টদের শান্তি এবং সংবিধান অনুযায়ী অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য প্রাথমিকভাবে চুড়ান্ত হওয়া রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের আন্দোলনের মাধ্যমে এদেশে ১৯৯৬ সনে তত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু এটা ছিলো বাংলাদেশের সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক রাজনীতিবিদদের জন্য অবমাননাকর একটি ব্যবস্থা। তার পরেও রাজনীতিবিদ ও দেশের মানুষ তা মেনে নিয়েছে।
এই তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বিভিন্নভাবে বিতর্কিত করে তোলে বিএনপি, জামাত জোট সরকার। নির্বাচন আসলেই রাজনৈতিক দলগুলো নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে মাঠে জল গোলা শুরু করে। হরতাল অবরোধের নামে জ্বালাও পোড়াও আন্দোলনের মাধ্যমে জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তোলে। বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি এই অবস্থার স্থায়ী সমাধান চায়।
আর অনির্বাচিত কোনো সরকার স্থায়ী সমাধান হতে পারে না। কারণ আমরা ফখরুদ্দীন, ইয়াজ উদ্দীন মার্কা, তত্বাবধায়ক সরকার দেখেছি। যারা নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে এসে নিজেরাই ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে চেয়েছিল। এ ধরনের তত্বাবধায়ক দেশের মানুষ আর চায় না।
বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি চায় বর্তমান সংবিধানের আলোকে অবাধ সুষ্ঠু অংশগ্রহণমুলক একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নির্বাচন কমিশনকে ঠোটো জগন্নাতের ভূমিকায় না রেখে কার্যত স্বাধীন ও শক্তিশালী করতে হবে। অংশগ্রহণমুলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে জাতীয় সংলাপ আয়োজনেরও প্রস্তাব করছি।
বিএসপি চেয়ারম্যান বলেন, ইরাক, সিরিয়া, ফিলিস্তিন, আফগানিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এমনকি আমেরিকার মতো রাষ্ট্রে নিরীহ নিরপরাধ ১৭ হাজার মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হলেও সেখানে যুক্তরাষ্ট্রসহ তাদের মিত্রদের চোখে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় না। শুধু বাংলাদেশেই তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন খুঁজে পায়। গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের নামে কেউ যদি জোর করে এদেশের জনগণের ওপর কিছু চাপিয়ে দিতে চায় তা জনগণ মেনে নেবে না।
সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী বলেন, এদেশে নির্বাচন কিভাবে হবে তা ঠিক করবে এ দেশের জনগণ। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি মানবতা দেখাতে চায় তাহলে মিয়ানমারকে চাপ দিয়ে রোহিঙ্গাদেরকে তাদের দেশ মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিয়ে মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করুক। বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ সমস্যা বাংলাদেশের জনগণই সমাধান করবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
যারা বিদেশে লভিষ্ট নিয়োগ করে প্রতিনিয়ত দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত তাদের বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। বিএসপি প্রধান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী হিসেবে সুনাম ও দক্ষতার সাথে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রেখে আসছেন বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী। একটি মহল তাদের বিরুদ্ধেও অবস্থান নিয়ে অপপ্রচারে লিপ্ত। এরা দেশ, জাতির শত্রু। এদের বিরুদ্ধে দেশের জনগণকে রুখে দাঁড়াতে হবে। বিএসপি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এই অপশক্তির বিচার দাবি করছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ-জয়ন্তী অনুষ্ঠানে মুসলমানদের নির্যাতনের কথা বলে বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রিত অতিথি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমন ঠেকানোর নামে আন্দোলন ও জ্বালাও পোড়াও করে দেশের সম্পদ ধ্বংস করে কোটা আন্দোলন থেকে গজিয়ে ওঠা একটি দল জনগণের মাঝে ভোগান্তি সৃষ্টি করেছে। তারাই আবার যেই ইসরাইল ৭০ বছর ধরে ফিলিস্তিনের মুসলিম জনগণের ওপর অমানুষিক জুলুম, নিপীড়ন, নির্যাতন, ধর্ষণ, নারী-শিশু হত্যাসহ মুসলমানদেরকে তাঁদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করছে। সেই ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সাথে গোপন বৈঠক করে। এই ধরনের দ্বিচারিতার জন্য আমি তদন্ত পূর্বক তাদের শাস্তি দাবি করছি।
বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির বিরুদ্ধে যারা বিভিন্নভাবে অপপ্রচারে লিপ্ত ও প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন এবং নির্বাচন কমিশনে মিথ্যা, বানোয়াট ও বিভ্রান্তিমুলক তথ্য দাখিল ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে নির্বাচন কমিশন, সরকার, দেশের আইন আদালতকে প্রশ্নবিদ্ধ ও প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। তারা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দরখাস্ত প্রত্যাহারসহ সংবাদ সম্মেলন করে জাতির সামনে ক্ষমা না চাইলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অনুষ্ঠান থেকে ২৩ জুলাই রবিবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির বিরুদ্ধে সকল অপপ্রচারের বিষয়ে দেশবাসীকে জানানোর ঘোষনা দেয়া হয়।
এছাড়াও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) আগামী ২৮ জুলাই চট্টগ্রামে, ১লা আগস্ট মুন্সিগঞ্জে, ৭ আগস্ট গাজীপুরে ও ৮ আগস্ট কুমিল্লায় জন সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়া হয়।
বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির সমাবেশে অতিরিক্ত মহাসচিব মুফতী বাকী বিল্লাহ আল আযহারীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, বিএসপির ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ফজলুল হক আকন্দ, আল্হাজ্ব মাওলানা রুহুল আমিন ভূঁইয়া চাঁদপুরী, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাড জালাল উদ্দিন, মোঃ আসলাম হোসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আবুল কালাম আজাদ, দপ্তর সম্পাদক মোঃ ইব্রাহিম মিয়া, মোঃ হাবিবুর রহমান পায়েল, অ্যাড শাহ আলম অভি, মিরানা জাফরীন চৌধুরী, মোঃ দেলোয়ার হোসেন জনসহ কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন পর্যায়ের বিএসপির নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে প্রাথমিকভাবে নিবন্ধনের জন্য চুড়ান্ত হওয়ায় নতুন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টিকে অভিনন্দন জানান ইসলামি ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী। ইসলামি গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক এমপি লায়ন এমএ আউয়াল, বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক পার্টির চেয়ারম্যান ফারাহনাজ হক (রিফাত), ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান মোস্তাক ভাসানীসহ বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ।