সড়কের তেমন কোন উন্নয়ন হয়নি। দীর্ঘদিন পরে হলেও বন্দরের ব্যবসায়ি ও বন্দরবাসীর বহুল কাঙ্ক্ষিত চার লেন সড়ক ও সড়কের দুই পাশের ড্রেন নির্মাণের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। প্রায় ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে হিলি বন্দরের চেকপোস্ট থেকে মহিলা কলেজ পর্যন্ত বন্দরের প্রধান সড়কের ২ কিলোমিটার চার লেন করার কাজ শুরু হয়েছে। শুরুতেই সড়কের সোলিং কাজ এবং সড়কের দুইপাশে ড্রেন নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়দের মাঝে কাজের মান নিয়ে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
সরজমিনে দেখা যায়, বন্দরের ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট (জিরো পয়েন্ট) থেকে মহিলা কলেজ পর্যন্ত দুই কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নে আরসিসি ঢালাইযুক্ত ফোর লেন এবং সড়কের উভয় পাশে ১ মিটার করে ৪৪শ’ মিটার ড্রেন নির্মাণ করা হবে। ২০১৯ সালে এই প্রকল্প পাস হলেও কাজ শুরু হয় চলতি বছরের অক্টোবরে।
ঢাকার ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বন্দরের পানামা পোর্টের সামনে থেকে ফোর লেন সড়কের সোলিং কাজ শুরু করেছে। পাশাপাশি এই প্রকল্পের আওতায় ১ মিটার চওড়া ড্রেন নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। কিন্তু প্রতিদিন দেশীয় ট্রাক, ভারী যানবাহন ও ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলে সড়কের নির্মাণ কাজ এর মান নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
বন্দরের চার লেন সড়ক ও ড্রেন নির্মাণের কাজ দিনাজপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ তদারকি করছে বলে জানা গেছে।
হিলি বন্দরের চারমাথা মোড় এলাকার বাসিন্দা নাসিম আহম্মেদ, রজ্জব আলী ও ব্যবসায়ী মুকুল হোসেন বলেন, বন্দরের চার লেন সড়ক ও ড্রেন নির্মাণ বন্দরবাসীর বহুল কাঙ্ক্ষিত একটি কাজ। হিলি স্থলবন্দরে ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাকের পাশাপাশি বাংলাদেশি ভারী যানবাহন চলাচল করে প্রতিদিন। এ কারণে সরকার ফোর লেন সড়ক নির্মাণ করছে। এই সড়কে আরসিসি ঢালাই দিয়ে সড়কের নির্মাণ কাজে ১নং ইটের খোয়া ও গুণগত মানের বালু দিয়ে সোলিং করার কথা। যা রোলার দিয়ে মজবুতভাবে ডলা দেয়ার নিয়ম। টেন্ডারেও তাই উল্লেখ আছে। কিন্তু কাজের শুরুতেই নিম্নমানের ইটের খোয়া ও মাটিযুক্ত বালু দিয়ে সোলিং করা হচ্ছে। ঠিকমত রোলার দিয়ে সোলিং দাবানো হচ্ছে না। আবার কাদাপানি অপসারণ না করেই পূর্বের ড্রেনের উপর ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।
তারা আরও অভিযোগ করেন, কয়েকদিন আগে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে এসব কাজ করা হলে পরে স্থানীয়দের বাধার কারণে তা সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে, নির্মাণ কাজে নিন্ম মানের সামগ্রী ব্যবহার করার অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প ম্যানেজার মুনসুর আলম বলেন, নিম্নমানের ইটগুলো ফেরত পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য কাজ ঠিকমতো করা হচ্ছে। ৪ হাজার ৪০০ মিটার ড্রেন নির্মাণের মধ্যে প্রথমে ২ হাজার ৭০০ মিটার ড্রেন নির্মাণ হবে। বাকি ১৭০০ মিটার ড্রেন কোথায় হবে তা আমি জানি না। ৩৪ কেটি টাকা ব্যয়ে চার লেন রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে দিনাজপুর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী কর্মকর্তা অনফ সরকার বলেন, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ হচ্ছে, বিষয়টি জানলাম। সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি দেখা হবে।
হাকিমপুর থানা প্রতিনিধি মোঃ ওয়াজ কুরনী