বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
ক্লাসের বন্ধুরা তাকে সারপ্রাইজ দেয়ার কথা। স্কুল ছুটির সময় বন্ধুদের সাথে কথা হয় পরের দিন ক্লাসে যেন চকলেট নিয়ে আসেন নাফিস। ছোট আয়োজনও করবে বলে ঠিক করেছিলেন বন্ধুকে না জানিয়ে। কিন্তু ক্লাসে ফিরে আর জন্মদিন পালন করা হলো না তার। দশম শ্রেনী পড়ুয়া নাফিস ও বাপ্পি পরপাড়ে চলে গেছেন ৯ম শ্রেনীর কিশোর গ্যাংয়ের হামলায়।
সহপঠিদের সূত্রে জানাগেছে, ২৩ মার্চ ছিল নাফিসের জন্মদিন। তার সহপাঠিরা বায়না ধরেছিল জন্মদিনে কেক কাটতে হবে, চকলেট খাওয়াতে হবে। যথারীতি কথা মেনে পরের দিনের প্রগ্রাম বাস্তবায়ন করার কথা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন নাফিস।
স্কুল থেকে ২শ মিটার দুরে ব্রীজের ওপর পৌঁছলে আগে থেকে সেখানে ওঁৎ পেতে থাকা নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রায়হান কাজী, হাসিবুল কাজী, সৈকত, মশিউর রহমান (নাইম), নাঈম হোসেন সংঘবদ্ধভাবে নাফিসের ওপর হামলা করে। তাকে বাঁচাতে মারুফ ও সিয়াম এগিয়ে আসলে ৩জনকেই ধারালো অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে। এতে সিয়াম প্রানে বেঁচে গেলেও মৃত্যুর কাছে হার মানতে হয় নাফিস ও মারুফকে।
গুরুতর জখম অবস্থায় স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে বাউফল হাসপালে নিয়ে গেলে অবস্থার অবনতি দেখে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে একই সাথে মারা যান নাফিস ও মারুফ।
সহপাঠি মারুফা, সাঞ্জিদা, জিনিয়া, রাবেয়া, রিমা, জান্নাত, সুমাইয়া, সুরাইয়া কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমরা নাফিসের সাথে ছুটির আগে কথা বলেছিলাম পরের দিন তার জন্মদিনের ট্রিট চেয়ে বায়না ধরেছিলাম। কালকে সে চকলেট নিয়ে আসবে বলেছিল। আমরাও ছোট আযোজন করে তাকে সারপ্রাইজ দিব ভেবে রেখেছি।
আমরা মাত্র স্কুল থেকে বের হয়ে রাস্তায় এসেছি এর মধ্যে দেখতে পেলাল কিছু লোক নাফিসকে নিয়ে স্কুল সংলগ্ন একটি ফার্ম্মেসীতে নিয়া এসেছে। অনেক রক্তাক্ত ছিল নাফিস ও মারুফ। এদের মত মেধাবীদের এভাবে চলে যাওয়া মেনে পারছেন না তারা।
এসময় সিয়াম ও মারুফের খুনিদের দ্রæত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।
প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের মেবাধী দুই শিক্ষার্থীকে এভাবে হাড়াতে হবে কোন চিন্তাও করিনি। যারা এ ঘটনার সাতে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। যাতে ভবিষ্যাতে এরকম কোন ঘটনা আর না ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, হামলাকারীরা কিশোর গ্যাঙয়ের সদস্য। তারা প্রায়ই এলাকায় মারামারি ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। এলাকাবাসী তাদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। তারা বিভিন্ন ধরনের নেশার সাথেও জড়িত।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আল মামুন বলেন, হতাকারীদেরকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যেভাবেই হোক তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
Leave a Reply
Comment *