কহিনুর বাউফল( পটুয়াখালী )প্রতিনিধি।। একটি
পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলায় মাটির রাস্তা নির্মাণ করতে গিয়ে ওই রাস্তার দুই পাশের পরিবেশ বান্ধব প্রায় দেড় শতাধিক তাল গাছ ও খেজুর গাছ কেটে উপড়ে ফেলা হয়েছে। ভেকু মেশিন দিয়ে গাছগুলো উপড়ে ফেলা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাউফল সদর ১২নং ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের যৌতা গ্রামের আনছার বিশ্বাসের বাড়ি থেকে ইসমাইল ফকিরের বাড়ি পর্যন্ত ২ হাজার ৫শ ফুট (প্রায় ১ কিলোমিটার) রাস্তা নির্মাণের জন্য স্থানীয় এমপির বিশেষ বরাদ্ধ থেকে কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচী (কাবিখা) প্রকল্পের আওতায় ১৪ মেট্রিক টন গম বরাদ্ধ দেয়া হয়। যার সরকারী মূল্য ৫ লাখ ৮৮ হাজার টাকা।
নিয়মানুযায়ি শ্রমিক দিয়ে মাটি কেটে রাস্তা নির্মাণের কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের সভাপতি ও সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান লিটু মোল্লা ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে রাস্তায় ফেলছেন। আর এই মাটি কাটতে গিয়ে ভেকু মেশিন দিয়ে রাস্তার দুই পাশের ছোট বড় প্রায় দেড়শতাধিক তাল গাছ ও খেজুর গাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে। সম্প্রতি পটুয়াখালী জেলার কালাপাড়া উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নে তাল গাছ কাটার কারণে উচ্চ আদালত সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও উপজেলা প্রকৌশলীকে তলব করেন।
০৫.০৬.২৩ইং তারিখ রোজ সোমবার সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে স্থানীয় আনছার বিশ্বাসের বাড়িরর সামনে পাকা রাস্তার সামনে থেকে ইসমাইল ফকিরের বাড়ি পর্যন্ত মাটির রাস্তাটি গত শুক্র ও শনি বার(২ ও ৩ জুন) ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে রাস্তার নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়েছে। রাস্তার নির্মাণ কাজ করতে গিয়ে রাস্তার দুই পাশের ৯২ টি ছোট বড় তাল গাছ ও ৫১ টি খেজুর গাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে। গাছগুলো রাস্তার পাশে পরে আছে। উপড়ে ফেলা ফলন্ত তাল গাছ কয়েকজন শিশু ও কিশোর তাল কেটে সাষ খাচ্ছেন। উপড়ে ফেলা অধিকাংশ খেজুর গাছ ছিল ফলন্ত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েক নারী ও পুরুষ জানান, শ্রমিক দিয়ে মাটি কাটা হলে গাছগুলো উপড়ে ফেলা লাগতো না। ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কাটায় গাছগুলো উপড়ে ফেলা হয়েছে। গাছগুলো পরিবেশ বান্ধব ছিল । পথচারিদের ছায়া দিত।
প্রকল্প বাস্তয়ন কমিটির সভাপতি কামরুজ্জামান লিটু মোল্লা বলেন,‘কাবিখা প্রকল্পের মাধ্যমে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। আর এ কাজ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে রাস্তার মধ্যে থাকা কিছু তাল গাছ ও খেজুর গাছ কাটা হয়েছে।’
বাউফল সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম বলেন,‘ বিষয়টি আমি জানিনা। কোন ভাবেই রাস্তার পাশের পরিবেশ বান্ধব তাল গাছ ও খেজুর গাছ কাটা যাবেনা। আমি সরেজমিন গিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবো।’
এ ব্যাপারে প্রকল্প বাস্তায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) রাজিব বিশ্বাস বলেন, ‘ আমার জানামতে সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা কামরুজ্জামান লিটু মোল্লা কাজটি করেছেন। রাস্তাটি স্থানীয় এমপির বিশেষ বরাদ্ধ থেকে নির্মাণ করা হয়েছে। তাকে রাস্তা করতে বলা হয়েছে , গাছ কাটতে বলা হয়নি।’
উপজেলা বন কর্মকতা বদিউজ্জামিান সোহাগ বলেন,‘ তাল গাছ ও খেজুর গাছ কাটার কোন বিধান নেই। একান্ত প্রয়োজনে গাছ কাটতে হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে কাটতে হবে। আমার জানামতে এখানে গাছ কাটার কোন অনুমোদন নেই।’
বাউফল উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বায়েজেদুর রহমান বলেন,‘ আমি কোন গাছ কাটার অনুমোতি দেইনি। আর আমি অনুমোতি দিতেও পারিনা। বিষয়টির খোঁজ খবর নেয়া হবে।’
কহিনুর বেগম
বাউফল(পটুয়াখালী)
০৫.০৬.২৩