পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলায় বাউফল থানার ওসির কাছে বিচার চাইতে এসে ১৫ ঘন্টা হাজতে কাটালেন এক বাবা, তার ৮ম শ্রেণী পড়–য়া ছেলে, স্যালোক ও অভিযুক্ত এক ব্যক্তি। ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ছেলেকে মারধর করার বিচার চাইতে বাউফলের ০১নং কাছিপাড়া ইউনিয়নের পাকডাল গ্রামের পারভেজ মিয়া (৩৮) তার ছেলে কর্ণর মিয়া (১২) ও স্যালোক রাকিবকে (২৫) নিয়ে ০৩.০৭.২৩ইং তারিখ রোজ সোমবার রাত ৮ টায় বাউফল থানা ওসি আরিচুল হকের কাছে আসেন । তিনি প্রতিপক্ষ আব্বাস হাওলাদার ও তার ছেলে অপুর বিরুদ্ধে বিচার চাইতে আসেন । ওইসময় তার স্ত্রী সীমা বেগম(২৭) সাথে ছিলেন। এ খবর পেয়ে প্রতিপক্ষ আব্বাস হাওলাদার থানায় আসেন। এরপর ওসি ৮ম শ্রেণী পড়–য়া কর্ণর, তার বাবা পারভেজ, মামা রাকিব ও অভিযুক্ত আব্বাস হাওলাদরকে ওসির অফিস কক্ষের সামনে একটি কক্ষে ডুকিয়ে রেখে বাহির থেকে দরজায় তালা লাগিয়ে দেন।
রাত ৮টার দিকে তাদেরকে ওই রুমের মধ্যে ডুকানো হয় এবং রাত সাড়ে ১০ টার দিকে কয়েকজন পুলিশ শিশু কর্ণরকে চিকিৎসার জন্য মটরসাইকেলযোগে গোরস্তানরোড এলাকায় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। সেখান থেকে চিকিৎসা শেষে থানায় নিয়ে আসে। সেখান থেকে তাকে তার মায়ের জিম্মায় ছেড়ে দিলেও অন্যান্যদের ওই রুমের মধ্যে আটকে রাখা হয়। এরপর সেখান থেকে তাদের থানা হাজতে নিয়ে রাখা হয়।
এরপর ওই তিন আসামীকে ১৫১ ফৌজদারী ধারায় আসামী করে গ্রেফতার দেখিয়ে মঙ্গলবার (৪ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টায় পটুয়াখালী কোট হাজতে পাঠানো হয়। বাউফল থানার এসআই বাদল কৃষ্ণ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
পটুয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক মোঃ জামাল হোসেন ওই দিন দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে আসামীদের জামিন মঞ্জুর করেন। বিকাল ৪টায় আসামীরা কোট হাজত থেকে ছাড়া পান।
আসামী পক্ষের আইনজীবি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন,‘সোমবার বিকাল ৫টার দিকে বাউফলের কাছিপাড়া শহীদ জালাল সরকারী প্রাইমারী স্কুল মাঠে ফুটবল খেলা নিয়ে আব্বাস হাওলাদার ও পারভেজ হাওলাদারের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে মামলা করে। এই মামলায় আব্বাস হাওলাদার, রাকিব হাওলাদার ও পারভেজ মিয়াকে আসামী করা হয়। ফুটবল খেলায় পারভেজ মিয়ার ৮ম শ্রেণী পড়–য়া ছেলে কর্নরকেও মারধর করা হয়। আসামীদের বক্তব্য সত্য হলে তাদেরকে পুলিশের হয়রানি করা ঠিক হয়নি।
পারভেজ মিয়ার স্ত্রী সীমা বেগম অভিযোগ করেন, ‘তার স্বামী ও ছেলেকে মারধর করার অভিযোগ জানাতে ওসির কাছে আসেন । তিনি অভিযোগ না নিয়ে উল্টো তার স্বামী, ছেলে ও এক ভাইকে ও প্রতিপক্ষ আক্কাস হাওলাদারকে আটকে রাখেন। ওসি আমাদের অভিযোগ আমলে না নিয়ে ইচ্ছা করে আমার স্বামী, সন্তান ও ভাইকে আটকে রাখেন। পরে শুনলাম পুলিশ বাদি হয়ে মামলা করেছে। আর সেই মামলায় তাদেরকে কোর্টে চালন করা হয়েছে। আমি ওসির নির্দয় আচরণের বিচার চাই ’
বাউফল থানার ওসি আরিচুল হক বলেন,‘ ফুটবল খেলায় মারামারি হচ্ছে এই খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আব্বাস হাওলাদার, রাকিব হাওলাদার, পারভেজ মিয়া ও তার ছেলে কর্ণরকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এর মধ্যে শিশু কর্ণরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। অন্যান্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
কহিনুর বেগম
বাউফল(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি।।