বঙ্গপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’র প্রভাবে উত্তাল হয়ে উঠেছে ভোলার মেঘনা মোহনা। সকাল থেকেই গুড়ি-গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে জেলার বিভিন্ন এলাকায়। সকাল থেকেই ভোলার মেঘনা নদীর পানি বিপদ সীমার ৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তবে ঘূণিঝড় শঙ্কায় উপকূলবাসী উদ্বিগ্ন রয়েছেন। সন্ধা ৬টার সময় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’ আরও শক্তিশালী হচ্ছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সংস্থাটি জানিয়েছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এই ঘূর্ণিঝড় আকারেও বেশ বড়। এটি ভারতের সমুদ্র উপকূলবর্তী তিনটি রাজ্য এবং বাংলাদেশের ওপর বিস্তৃত। তিতলি প্রতি ঘণ্টায় ১৪ কিলোমিটার বেগে উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। এর ফলে চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর এবং কক্সবাজারে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আজ মধ্যরাতে বা ভোরবেলা ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের খুলনা উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর উত্তাল রয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে প্রস্তুতি সভা করেছে জেলা প্রসাশন। সভায় ভোলার সরকারি-বেসরকারি ও এনজিও কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় দপ্তরের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সকল ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সকল যাত্রীবাহী ও মাছ ধরার নৌযান কে সতর্ক অবস্থায় থাকতে বলা হয়েছে। এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় মেডিকেল টিম ও জরুরী উদ্ধার কাজে সেচ্ছাসেবক দল গঠন করা হয়েছে। এবং বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। সকাল থেকেই ভোলার প্রায় ৫০০টি সাইক্লোন সেল্টারকে প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে।
ভোলাসহ উপকুলীয় এলাকায় ৪ নম্বর বিপদ সংকেত দেখানো হচ্ছে। এ ঘূর্ণিঝড় আগামী বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের উপকুলে আঘাত হানতে পাড়ে বলে স্থানীয় আবওহায় অফিস জানিয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক জানান, ভোলা সদরসহ ৭টি উপজেলায় কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। প্রত্যেক উপজেলায় পর্যাপ্ত শুকনো খাবার মজুদ রাখার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও সকাল ভোলার প্রায় ৫০০টি সাইক্লোন সেল্টারকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরণের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।