শেষ সপ্তক, তেরো –

শেষ সপ্তক, তেরো –

সত্যের খোঁজে আমরা

রাস্তায় চলতে চলতে
বাউল এসে থামল
তােমার সদর দরজায়।
গাইল, ‘অচিন পাখি উড়ে আসে খাঁচায়।’
দেখে অবুঝ মন বলে,
‘অধরাকে ধরেছি।’

তুমি তখন স্নানের পরে এলােচুলে
দাঁড়িয়ে ছিলে জানলায়।
অধরা ছিল তােমার দূরে-চাওয়া চোখের
পল্লবে,
অধরা ছিল তােমার কাঁকন-পরা নিটোল হাতের
মধুরিমায়।
ওকে ভিক্ষে দিলে পাঠিয়ে,
ও গেল চলে;
জানলে না এই গানে তােমারই কথা।

তুমি রাগিণীর মতাে আস যাও
একতারার তারে তারে।
সেই যন্ত্র তােমার রূপের খাঁচা,
দোলে বসন্তের বাতাসে।
তাকে বেড়াই বুকে করে;
ওতে রঙ লাগাই, ফুল কাটি
আপন মনের সঙ্গে মিলিয়ে।
যখন বেজে ওঠে, ওর রূপ যাই ভুলে;
কাঁপতে কাঁপতে ওর তার হয় অদৃশ্য
অচিন তখন বেরিয়ে আসে বিশ্বভুবনে,
খেলিয়ে যায় বনের সবুজে,
মিলিয়ে যায় দোলনচাঁপার গন্ধে।

অচিন পাখি তুমি,
মিলনের খাঁচায় থাক-
নানা সাজের খাঁচা।
সেখানে বিরহ নিত্য থাকে পাখির পাখায়,
স্থকিত ওড়ার মধ্যে।
তার ঠিকানা নেই,
তার অভিসার দিগন্তের পারে
সকল দৃশ্যের বিলীনতায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *