রেজাউল করিম সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা ভূমি অফিস কর্মকর্তা আবু হেনা মোস্তফা কামাল সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে জমি বিক্রির নামে প্রতারণা করে আমিনুল ইসলাম এর নিকট থেকে জমি রেজিষ্ট্রি না দিয়ে ১২ লক্ষ্য টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। এখন সে জমিও দিচ্ছে না টাকাও ফেরত দিচ্ছে না, করছে নানা রকম তালবাহানা, সেই সাথে জমি রেজিস্ট্রির জন্য জামতৈল সোনালী ব্যাংকে বাংলাদেশ সরকার বরাবর ৪টা পেমেন্ট অর্ডারের মাধ্যমে আরও ৯০,০৪০ (নব্বই হাজার চল্লিশ) টাকা জমা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ভুক্তভোগী আমিনুল ইসলাম।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী আমিনুল ইসলাম ১২ লক্ষ্য টাকা ও ব্যাংকে ৯০,০৪০ টাকা উদ্ধারের জন্য আবু হেনা মোস্তফা কামাল সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জ মোকাম- কামারখন্দ থানা আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছে।
ভুক্তভোগী আমিনুল ইসলাম সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ উপজেলার নান্দিনা কামালিয়া গ্রামের মৃত জুড়ান আলীর ছেলে,
টাকা আত্মসাৎকারী আবু হেনা মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী সিরাজগঞ্জ সদর থানার জুবলী বাগান গ্রামের মৃত আবু বক্কার সিদ্দিকীর ছেলে।
আবু হেনা মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী বেলকুচি উপজেলা ভূমি অফিস কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত রয়েছে বলে জানা যায়।
ভুক্তভোগী আমিনুল ইসলাম জানান, প্রতারক আবু হেনা মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী তার ভায়রার নিকট থেকে একটি জমি কিনে নিছে, সেই জমি বিক্রি করবে বলে আমাকে জানায়, তখন আমি বড় কুড়া গ্রামের দলিল লেখক আব্দুল মান্নান, নান্দিনা কামালিয়া গ্রামের হায়দার আলী, বৈদ্য জামতৈল গ্রামের মোঃ আরিফুর রহমান, নান্দিনা কামালিয়া গ্রামের মোঃ বেল্লাল খানকে সাথে নিয়ে জমির কাগজপত্র দেখে আলোচনা সাপেক্ষে জমির মূল্য ১২ লক্ষ্য টাকা নির্ধারণ করা হয়, উক্ত জমির জে এল নং-২৩ খতিয়ান নং- আর এস ৮৯৪- হিসাব নং- ১৪২৩ খারিজ খতিয়ান নং- ১৪২২ দাগ নং- আর এস-১০৮৩ রকম ফসলী.২৯০০ একর এর কাতে পশ্চিম ছাহাম হইতে. ১১০০ একর, পরে আবু হেনা মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী ৪ খানা ১০০ টাকার স্ট্যাম্প ২ খানা ৫০ টাকা মূল্যের স্ট্যাম্প ও ৪ খানা ২৫ টাকা মূল্যের স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর প্রদান করে, তখন তাদের উপস্থিততে আমি আবু হেনা মোস্তফা কামাল সিদ্দিকীকে ১২ লক্ষ্য টাকা দেই, তখন মুহুরি ৯০,০৪০ টাকার ব্যাংক পেমেন্ট ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করা কাগজপত্র দেখে দলিল লেখে কমপ্লিট করে আবু হেনা মোস্তফা কামাল কে সাথে নিয়ে সাব- রেজিষ্ট্রি অফিসে যাই, অফিসে যাইয়া আবু হেনা মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী বলে আপনারা বসেন আমি একটু বাজার হইতে ঘুরে আসি এই বলে সে চলে যায়, দীর্ঘ সময় বসে থাকার পর তার ফোন নাম্বারে একাধিক বার যোগাযোগ করলেও আসি আসছি বলে নানা রকম তালবাহানা করে ফোন কেটে দেয়, পরে অফিস বন্ধ হয়ে গেলে আমরা বাড়িতে চলে যাই, এখন পর্যন্ত সে জমিও রেজিষ্ট্রি দেয়নি আমার ১২ লক্ষ্য টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। আমি এই জমি কেনার জন্য কিস্তি থেকে টাকা তুলেছি বাড়ির গরু বাছুর বিক্রি করেছি এমনকি আত্মীয় স্বজনদের নিকট থেকে ঋণ করে আমি তাকে টাকা দিয়েছি, তার প্রতারণায় আমি এখন নিঃস্ব হয়ে গেছি। এজন্য আমার টাকা উদ্ধারের জন্য সিরাজগঞ্জ মোকাম- কামারখন্দ থানা আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেছি। যেন আমাকে জমি রেজিষ্ট্রি করে দেয়, না হয় আমার টাকা ফেরত দেয় সেই সাথে আমাদের হয়রানি, ব্যাংকে জমা দেওয়া ৯০,০৪০ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রতারণা করার দায়ে আবু হেনা মোস্তফা কামাল সিদ্দিকীর উপযুক্ত শাস্তি দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে নান্দিনা কামালিয়া গ্রামের মোঃ হায়দার আলী জানান, আবু হেনা মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী তার একটি জমি বিক্রি করবে বলে আমিনুল ইসলাম আমাকে ডেকে নেয়, জমির দরদাম শেষে ১২ লক্ষ্য টাকা বেচবে বলে সিদ্ধান্ত জানান আবু হেনা মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী, পরে আমিনুল ইসলাম ১২ লক্ষ্য টাকা দিয়ে জমি নিবে বলে রাজি হয়, আবু হেনা মোস্তফা কামাল অনেক গুলো স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করার পরে আমিনুল ইসলাম আমার সামনেই আবু হেনা মোস্তফা কামাল কে ১২ লক্ষ্য টাকা বুঝিয়ে দেয়, এমনকি সোনালী ব্যাংকে গিয়ে ৯০,০৪০ টাকা জমা দিয়ে সেই কাগজ মহুরির কাছে জমা দিলে তখন দলিল লেখে কমপ্লিট করে। যখন রেজিস্ট্রারের নিকট কাগজ জমা দিবে তখন সে বলে আমি একটু বাজারে যাবো, এই বলে সে পালিয়ে যায়।
১২ লক্ষ্য টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ ও সিরাজগঞ্জ মোকাম- কামারখন্দ থানা আমলী আদালতে আবু হেনা মোস্তফা কামাল সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকের ক্যামেরায় কথা বলতে রাজি হয়নি, তবে মৌখিকভাবে ১২ লক্ষ্য টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
এ বিষয়ে বেলকুচি উপজেলা ভূমি কমিশনার প্রতিক মন্ডল এর নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, আবু হেনা মোস্তফা কামাল সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে মৌখিকভাবে জানতে পেরেছি, তবে এর আগে মামলার কাগজ দেখেনি, তিনি বেলকুচি ভূমি অফিস কর্মকর্তা আর তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে সেটা কামারখন্দের ঘটনা, তাই এটা আমার আয়েত্মে নেই, তারপরও যেহেতু মামলা হয়েছে মামলার তদন্ত সাপেক্ষে সে যদি অপরাধী হয়ে থাকে প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে জানান তিনি।