ভোলায় রবিদাস জনগোষ্ঠীর ১১ দফা দাবি

ভোলায় রবিদাস জনগোষ্ঠীর ১১ দফা দাবি

লক্ষ্যে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

ভোলায় বাংলাদেশের অনগ্রসর রবিদাস জনগোষ্ঠীর জীবন, জীবিকা ও বাঁচার তাগিদে জীবনমান উন্নয়ন এবং মানবাধিকার সুরক্ষার ১১ দফা দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে।

সোমবার (২৩ মে) সকালে ভোলা প্রেসক্লাব চত্বরে বাংলাদেশ রবিদাস ফোরাম (বিআরএফ) ভোলা জেলা কমিটির আয়োজনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি হয়। মানববন্ধন শেষে ভোলা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

তাদের ১১ দফা দাবিগুলো হলোঃ- ১.অবিলম্বে “ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন” এর গেজেটে রবিদাস জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভূক্ত করা।
২. রবিদাসদের প্রতি অস্পৃশ্যতার চর্চা আইন করে নিষিদ্ধ করতে সংসদে উত্থাপিত “বৈষম্য বিরোধী আইন ২০২২” পাস করা। ৩. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি ও সরকারী চাকুরীতে রবিদাসদের জন্য ৫% কোটা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা। ৪.আগামীতে সংসদে রবিদাস জনগোষ্ঠীর জন্য ০৫ (পাঁচ) টি সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা করা। ৫.পাদুকা শিল্পকে জাতীয় শিল্প হিসেবে ঘোষণা দিয়ে পাদুকা শিল্পের জন্য আলাদা শিল্পনগরী স্থাপন করা। ৬. সরকারী খাস/জমিদারী খাস, পরিত্যক্ত জমি ও দীর্ঘদিন যাবত বসবাসরত ভিটা দখলী শর্তে রবিদাসদের মাঝে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রদান করা। ৭. রবিদাসদের নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি ও প্রথার সংরক্ষন, বিকাশ ও প্রসারে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করা। ৮. অসহায় রবিদাস জনগোষ্ঠীর সার্বিক অগ্রগতির লক্ষে তাদের মাঝে সরকারী অনুদান, ভাতা, ত্রানসামগ্রী ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বিতরন করা। ৯. পাদুকা ও চামড়া শিল্প বিকাশ এবং শ্রমিকদের উন্নয়নের জন্য সরকারের একটি বিশেষ কমিশন গঠন করা ১০. করোনাসহ বিভিন্ন দূর্যোগকালীন সময়ে ক্ষতিগ্রস্থ রবিদাস জনগোষ্ঠীর পাদুকা শ্রমিকদের বিশেষ আর্থিক প্রণোদনা দিওয়া।
ও ১১. জাতীয় বাজেটে পাদুকা শিল্পের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কারখানা স্থাপন ও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি যুক্ত করা।

এসময় বক্তারা বলেন, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে আপনার সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহন করেছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে এককালীন অর্থ সহায়তা, শিক্ষাবৃত্তি, বয়স্কভাতা ইত্যাদি প্রদান করে এই অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়নের চেষ্টা করছে বর্তমান সরকার। জাতীয় অর্থনীতিতে চামড়াশিল্প সর্বোচ্চ অবদান রাখলেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষদের অবদানকে ঐ অর্থে মূল্যায়ন করা হয়নি। বর্তমানে এ খাত রপ্তানি আয়ের দ্বিতীয় অবস্থানে থাকলেও রবিদাস সম্প্রদায়ের কারিগররা এর অংশীদার হতে ব্যর্থ হয়েছে। অর্থের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছে “দিন আনা দিন খাওয়া পর্যায়ের এই জনগোষ্ঠীর পরিবারগুলি। রবিদাস জনগোষ্ঠী সম্পর্কে সংশিষ্ট দপ্তরে নির্ভরযোগ্য তথ্য না থাকা, আন্তরিকতার অভাব এবং যথাযথ যোগাযোগ না থাকার কারনে এই সকল প্রাপ্য সুবিধাদি হতে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। এসময় তারা তাদের ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের জোর দাবি জানান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ হিন্দু,বৌদ্ধ, খিষ্টান এক্যপরিষদ আহবায়ক অবিনাষ নন্দী বাংলাদেশ রবিদাস ফোরাম (বিআরএফ) ভোলা জেলা কমিটির সভাপতি নিতাই রবিদাস, সাধারণ সম্পাদক গোপাল রবিদাস, সহ সাধারণ সম্পাদক অংকুর রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক নিখিল রবিদাস প্রমূখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *