উজ্জ্বল মিয়াঃ টাঙ্গাইলে মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে তাদেরকে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। র্যাব-১২ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন, টাঙ্গাইল সদর উপজলোর চৌবাড়ীয়া গ্রামের ওমর আলীর ছেলে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মো. শাহাদৎ হোসেন(৩৬) ও সখীপুর উপজেলার রতনপুর গ্রামের মৃত দরবেশ আলীর ছেলে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মো. বাদল মিয়া(৪৫)।
র্যাব-১২ জানায়, র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সহযোগীতায় গেয়েন্দা তৎপরতা ও প্রযুক্তি
ব্যবহার করে র্যাবের সিপিসি-৩ টাঙ্গাইলের কোম্পানী কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ আনিসুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি চৌকশ দল দেশের বিভিন্ন স্থানে নজরদারী ও আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করে। অতঃপর র্যাবের চৌকশ দলটি ঢাকা জেলার আশুলিয়ার কাইশা বাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মো. শাহাদৎ হোসেনকে এবং গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর
উপজেলার চন্দ্রা এলাকার হাজীবাড়ি থেকে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মো. বাদল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত মো. শাহাদৎ হোসেন ও মো. বাদল মিয়াকে মঙ্গলবার দুপুরে টাঙ্গাইল সদর ও সখীপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রকাশ, ২০০২ সালে টাঙ্গাইল সদর উপজলোর চৌবাড়ীয়া গ্রামের মো. শাহাদৎ হোসেনের সাথে
এ
কই উপজেলার ঘারিন্দা ইউনিয়নের আউলটিয়া গ্রামের জাহেরা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর শাহাদৎ তার শ্বশুর বাড়ির কাছে যৌতুক দাবি করেন। যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় ওই বছরের ৬
সেপ্টেম্বর রাতে মো. শাহাদৎ হোসেন তার স্ত্রীকে খুন করে শ্বশুর বাড়ির পাশে একটি পুকুরে ফেলে
রাখেন। ৭ সেপ্টেম্বর নিহতের ভাই ইউনুস আলী বাদি হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন
আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় জামিন পেয়ে মো. শাহাদৎ হোসেন আত্মগোপনে চলে যান।
সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাব্যুনালের বিচারক বেগম খালেদা
ইয়াসমিন ২০০৩ সালের ১৩ জানুয়ারি আসামির অনুপস্থিতিতে তার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।
অপরদিকে, ২০১৭ সালরে ১১ জানুয়ারি সখীপুরের এক কলজে ছাত্রীকে মো. বাদল মিয়া ফুসলিয়ে
অপহরণ করে নিয়ে যান। পরে তাকে পরিত্যক্ত একটি ঘরে ছয় মাস আটকে রেখে ছয় মাস ধরে
নিয়মিত যৌন নিগ্রহ করেন। ওই বছরের ২৯ জুলাই ওই কলেজ ছাত্রীকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায়
উদ্ধার করা হয়। পরে ওই ছাত্রীর ভাই বাদি হয়ে সখীপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। বাদল মিয়া গ্রেপ্তার
হওয়ার পর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলা চলাকালে বাদল মিয়া জামিনে মুক্তি পেয়ে
আত্মগোপনে চলে যান। ওই বছরের ১৫ আগস্ট টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের
বিচারক বেগম খালেদা ইয়াসমিন মো. বাদল মিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন।
এছাড়া মো. বাদল মিয়ার অনুপস্থিতিতে দেওয়া রায়ে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে
আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়