বাদামী গাছ ফড়িং ( Brown Plant Hopper or BPH ) ধানের একটি মারাত্মক ক্ষতিকর পোকা। বাদামী গাছ ফড়িং ধান গাছের গোড়ায় বসে রস চুষে খায়। ফলে গাছ পুড়ে যাওয়ার রং ধারণ করে

বাদামী গাছ ফড়িং ( Brown Plant Hopper or BPH ) ধানের একটি মারাত্মক ক্ষতিকর পোকা। বাদামী গাছ ফড়িং ধান গাছের গোড়ায় বসে রস চুষে খায়। ফলে গাছ পুড়ে যাওয়ার রং ধারণ করে

মরে যায়। আক্রান্ত ক্ষেতে বাজ পড়ার মতো রংধারণ করে হপার বার্ণ – এর সৃষ্টি হয়। অধিকাংশ কৃষকের কাছে বাদামী গাছ ফড়িং ‘‘কারেন্ট পোকা’’ বা ‘‘গুণগুণী’’ পোকা নামে পরিচিত।

বাদামী গাছ ফড়িং খুবই ছোট আকারের পোকা,প্রায় ৪ মিঃ মিঃ লম্বা ও বাদামী রঙের হয়। পূর্ণ বয়স্ক স্ত্রী ফড়িং পাতার খোল,পাতা ও পাতার মধ্য শিরার ভিতরে ডিম পাড়ে। ৭-৯ দিনের মধ্যে ডিম থেকে বাচ্চা (নিম্ফ) বের হয়। বাচ্চাগুলো ৫ বার খোলস বদলায়। বাচ্চা গুলো প্রথম পর্যায়ে সাদা রঙের হয় ও পরে বাদামী রং ধারণ করে। বাচ্চা থেকে পূর্ণ বয়স্ক ফড়িং এ পরিণত হতে আবহাওয়া ভেদে ১৪-১৬ দিন সময় লাগে।
এক জোড়া পোকা ৩-৪ প্রজন্মে প্রায় ৩৫ লক্ষ পোকার জন্ম দেয় এবং ৫০ মাইল পথ অতিক্রম করতে পারে। এই পোকা শরীরের ওজনের তুলনায় ১০-১২ গুন বেশী খায়। বীজ তলা থেকে শুরু করে পরিপক্ক হওয়া পর্যন্ত যে কোন সময় এ পোকার আক্রমণ দেখা দিতে পারে। তবে কাইচথোড় বের হওয়ার শুরু থেকে আক্রমণ বেড়ে যায়।
1/আক্রমণের অনুকুল পরিবেশঃ-
(ক)অধিক কুশি উৎপাদনকারী জাতের চাষ।
(খ)গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া (গুমট অবস্থা)।
(গ)ছায়াযুক্ত স্থানে বাদামী গাছ ফড়িং দ্রুত বংশবৃদ্ধি পায়।
(ঘ)জমি স্যাঁত স্যাঁতে হলে ও জমিতে দাড়ানো পানি থাকলে।
(চ)চারা ঘনকরে রোপন করলে।
(ছ)অধিক মাত্রায় ইউরিয়া সার ব্যবহার করলে।
(জ)বাতাস চলাচল কম হলে।
(ঝ)দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১৮-২৫ ডিগ্রী সেঃও আর্দ্রতা ৮০% হলে।
আক্রমণের লক্ষণঃ
বাদামী গাছ ফড়িং এর বাচ্চা (নিম্ফ) ও পূর্ণাঙ্গ পোকা উভয়ই ধান গাছের গোড়ার দিকে দলবদ্ধভাবে অবস্থান করে ও সেখান থেকে অনবরত গাছের রস শুষে খেতে থাকে। এ পোকা ধান গাছের কুশি স্তর হতে পরিপক্ক হওয়া পর্যন্ত আক্রমণ করে। তবে panicle initiation ও milking stage এ বেশী ক্ষতি করে।
এর ফলে গাছ প্রথমে হলুদ ও পরে শুকিয়ে মারা যায়, ফলে দুর থেকে পুড়ে যাওয়ার মতো দেখায়। এ ধরণের ক্ষতিকে হপার বার্ণ বা বাজপোড়া বলা হয়।
দমন ব্যবস্থাপনাঃ
জমির আইল পরিস্কার রাখা, সঠিক দুরত্বে (সারি থেকে সারি ২০-২৫ সেমি ও গুছি থেকে গুছি ১৫-২০ সেমি ) লাইনে চারা রোপন করতে হবে। ১০লাইন পরপর ১লাইন ফাঁকা রাখতে হবে।
পোকা আক্রান্ত জমির পানি সরিয়ে দিয়ে ৭-৮ দিন জমি শুকনা রাখতে হবে।

আক্রান্ত জমিতে মাহির ৫-৭ দিন পর মাহির ৮০ ডব্লযাই

16লিটারে 5 গ্রাম পানির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে কমপক্ষে দুইবার স্প্রে করতে হবে,

আক্রমনের মাত্রা বেশি হলে স্প্রে করার আগে জমির ধান গাছ বিলি কেটে /সারি কেটে দিতে হবে।

বাদামী গাছ ফড়িং ধানের থোড় হওয়া থেকে মিল্কিং স্টেজ এর যেকোন সময় আক্রমণ করতে পারে।

এই পোকা্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা করা উওম কারন আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে কমপক্ষে দুই বার মাহির80 wp ( পাইমেট্রোজিন60% + নিতেন পাইরাম 20%) স্প্রেকরতে হবে, ধানের থোড় অবস্থায় একবার এবং মিল্কিং স্টেজে আর একবার প্রতি 16 লিটারে ৫ গ্রাম মাহির স্প্রে করলে এই পোকার

আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাই
(মো শফিকুল ইসলাম
কালিগঞ্জ- ঝিনাইদহ)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *