বেপরোয়া তুরাগ থানার এস আই গোবিন্দ দাস ও নাফিজ মেহেদী, লাগাম ধরবে কে ?

বেপরোয়া তুরাগ থানার এস আই গোবিন্দ দাস ও নাফিজ মেহেদী, লাগাম ধরবে কে ?

দৈনিক সত্যের খোঁজে আমরা

বিলকিস আক্তার রুবি(ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি )

ডি এম পির, তুরাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) গোবিন্দ দাস ও এস আই নাফিজ মেহেদী দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে । তাদের কাছ থেকে যে কোন অপরাধী টাকার বিনিময়ে ছাড় পেয়ে যাচ্ছে । আর সাধারণ জনগণ হচ্ছে চরম হয়রানীর শিকার । সাধারন মানুষের জান মালের নিরাপত্তার চেয়ে ওই দুই এস.আই.এর টাকাই বেশী প্রয়োজন । তারা টাকার বিনিময়ে যে কোন ধরনের অপরাধীই হোক না কেন ছেড়ে দিতে দ্বিধা বোধ করেন না । এস আই গোবিন্দ দাস ও এস আই নাফিজ মেহেদী বলে বেড়ান আমরা তুরাগ থানার সিনিয়র দারগা এবং একটা বিটের ইনচার্জ তাই এই থানা এলাকায় যদি কেউ মাদক ব্যবসা, চুরি-ছিনতাই, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে তাহলে তাদেরকে মাসহারা দিয়েই করতে হবে । ঠিক তাদের থানা ও বিট এলাকার সকল ধরনের অপরাধীদের সাথেই রয়েছে তাদের ভাল সম্পর্ক । আর থানা ও তাদের বিট এলাকার সাধারন মানুষজন ও ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা জেন তাদের চরম শত্রু । তারা ডিউটিতে বের হলেই সাধারন মানুষ ও ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা হয়ে পড়েন আতংকিত । ধউর এলাকার ফুটপাতে শরবত বিক্রেতা সুইপার শরিফ, চা দোকানী ভুট্টু, মন্তা, লাবনি, কাইউম, গ্যারেজ মালিক মনির, রিপন, শাহিন, জসিম, শহিদসহ এক কথায় কামারপাড়া থেকে পঞ্চবটি পর্যন্ত ফুটপাতের যত ব্যবসায়ী আছে তারা প্রায় সকলেই জানান, এই এলাকায় তুরাগ থানার অন্য অফিসাররা ডিউটি করলে আমরা যে পরিমান টাকা দেই তার দিগুন টাকা দিতে হয় এস আই গোবিন্দ দাসকে । আর সে যেদিন বিশেষ করে রাতে ডিউটিতে আসে সেদিন আমরা অনেকেই তার ভয়ে দোকান বন্ধ করে চলে যাই । কারন তার চাহিদা মতো টাকা দিতে না পারলেই আমাদের উপর চালানো হয় বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন । বেড়ীবাঁধ এলাকার ট্রাফিক পুলিশের সহয়তাকারি পরিচয়ে সুমন নামে একজন জানান, এই এলাকায় প্রায় ২০/২৫জন ভাসমান পতিতা রয়েছে এরা সকলেই এস আই গোবিন্দ দাসকে নিয়মিত মাসহারা দিয়ে রাতের পর রাত প্রকাশেই দেহ ব্যবসা করে থাকে । আবার একটু ভাল মানের খদ্দের পাইলে এস আই গোবিন্দ দাস গিয়ে তাকে মামলার ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নেন মোটা অংকের টাকা । নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার একাধিক বাসিন্দা ও ট্রাফিক পুলিশের সহয়তাকারি সুমন আরও জানান, এস আই গোবিন্দ দাস ও এস আই নাফিজ মেহেদীর রয়েছে ২০\৩০ জনের বিশাল একটি সোর্স বাহিনী । এর মধ্যে পুরান কালিয়ার দাড়িওয়ালা সেলিম, ধউর মুচিপাড়ার সঞ্জয়, অজয়, কুডু রুবেল, গোপাল, বরুন, ধউর প্রাইমারী স্কুল এলাকার মনা ঘোষ, রাজকুমার, নিখিল, ভাড়াটিয়া সুমন, শুভ, আশুতিয়ার শজিব, রইচ, পান্নু, গোপালগঞ্জের মিরাজ, রাজাবাড়ি এলাকার বাবু ওরফে বুলেট বাবু অন্যতম । আর এই সোর্স বাহিনীর মাধ্যমেই মানুষের কাছ থেকে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয় এস আই গোবিন্দ দাস ও এস আই নাফিজ মেহেদী । গত ২১শে অক্টোবর শুক্রবার দিনগত রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে গাজীপুর মহানগর টঙ্গী পূর্ব থানাধীন টিএন্ডটি বাজার থেকে মোটর সাইকেল আরোহী মোঃ রহিম মিয়া (৩৮) ও মোঃ মোবারক হোসেন নামে দুইজনকে জোর পূর্বক টেনে হিঁচড়ে একটি হাইচ গাড়ীতে করে তুলে আনেন সাদা পোশাকধারী তুরাগ থানা পুলিশের একটি দল । পরে তাদের ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে পরিবারের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন লাখ টাকা । কিন্তু টাকা নেওয়ার পর তাদের না ছেড়ে উল্টো ১৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার দেখিয়ে একটি মাদক মামলা রুজু করেন থানার এস আই নাফিজ মেহেদী । পরের দিন তাদের উক্ত মাদক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরন করা হয় । বর্তমানে আটককৃতরা জেল হাজতে রয়েছে । উক্ত মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা এস আই গোবিন্দ দাস । আটককৃতদের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়, গ্রেপ্তারকৃত মোঃ রহিম মিয়া ও মোঃ মোবারক হোসেন ষড়যন্ত্রের শিকার । তাদের প্রতিপক্ষের লোকজন মোটা অংকের টাকার বিনিময় পার্শ্ববর্তী তুরাগ থানার অসৎ পুলিশ কর্মকর্তা এস আই গোবিন্দ দাসের সহযোগিতায় এবং একই থানার অপর এস আই নাফিজ মেহেদীর মাধ্যমে নিরপরাধ দুইজন ভাল মানুষকে মাদক মামলার আসামী বানিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে । মামলার এজাহারে উল্লেখ্য করা হয়, আটককৃত দুইজনকে তুরাগের সাহেব আলী মাদ্রাসার সামনে ইসলাম ব্রাদার্স এলপিজি ফিলিং স্টেশন সংলগ্ন দিদারের খাবার হোটেলের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । কিন্তু বিভিন্ন সি সি টিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায় তাদের গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানাধীন টিএন্ডটি বাজার থেকে রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে আটক করে সাদা রঙয়ের একটি হাইস মাইক্রো বাসে করে তুরাগে নিয়ে আসা হয় । আর তাদের ব্যবহৃত মটর সাইকেলটি পুলিশের এক সদস্য চালিয়ে নিয়ে আসেন । তুরাগ থানা পুলিশ টঙ্গী পূর্ব থানা এলাকায় গিয়ে তাদের আটক করার বিষয়টি অবগত নন বলে জানান টঙ্গী পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আশরাফুল ইসলাম পিপিএম । উপরোক্ত ঘটনার সুস্থ তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ভুক্তভোগী মোঃ রহিম মিয়া ও মোঃ মোবারক হোসেনের পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে ইতিমধ্যে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন । এই ধরনের শত শত অপরাধ করার পরেও এস আই গোবিন্দ দাস ও এস আই নাফিজ মেহেদীর মতো দুইজন অসৎ পুলিশ কর্মকর্তা একই থানায় প্রায় পাঁচ বছর সময় ধরে কি ভাবে বহাল থাকে? তাদের খুঁটির জোর কোথায় প্রশ্ন সাধারন জনগনের । উপরোক্ত অভিযোগের বিষয় জানতে, এস আই গোবিন্দ দাসের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবী করেন তিনি । অপর দিকে এস আই নাফিজ মেহিদির সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে, মোঃ রহিম মিয়া ও মোঃ মোবারক হোসেনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার এজাহারে উল্লেখিত ঘটনা শতভাগ সঠিক বলে দাবী করেন তিনি ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *