হযরত মুসা আঃ দিধাহীন ভাবে বলে উঠলেন “আমি”
যেহেতু আমি জামানার নবী/রাসুল সেহেতু আমিই আল্লাহর অধিক হেকমত প্রাপ্ত।
হযরত মুসা আঃ এমন উত্তরে আল্লাহ উনার প্রতি নারাজ হন, এবং হযরত মুসা আঃ কে বলেন………
“হে মুসা দুই সমূদ্রের সংযোগ স্থলে আমার এক বান্দা আছে যে তোমার চেয়ে বেশি জ্ঞানী এবং তোমার চেয়ে বেশি হেকমত প্রাপ্ত”
আল্লাহর এই কথা শুনে হযরত মুসা উনাকে দেখার জন্য উনার পরিচয়ের জন্য ব্যাস্ত হয়ে উঠলেন,
আল্লাহ পাক তখন হযরত মুসা আঃ কে বললেন উনার নাম
“খিজির, দুই সমূদ্রের সংযোগ স্থলে তিনি আছেন,সেখানে যাওয়ার সময় একটি মাছ ভেজে/রান্না করে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন,এবং যেখানে মাছটি জীবিত হবে সেখানেই হযরত খিজির আঃ কে খোজার কথা বললেন।
হযরত মুসা আঃ আল্লাহর কথা অনুযায়ী একটি মাছ রান্না/ভেজে নিলো এবং সাথে উনার এক সঙ্গী কে নিলেন উনার নাম ছিলো” ইউসা” সেই রান্না করা মাছটি ইউসার নিকটে দিলেন এবং উনাকে বলে দিলেন এখানে একটি রান্না করা মাছ আছে যেখানে এই মাছটি জিন্দা হয়ে যাবে সেটাই আমাদের গন্তব্য স্থল তুমি মাছটির দিকে লক্ষ্য রাখবে।
এভাবে উনারা কয়এক দিন পথ চললো, এক জায়গাতে উনারা ক্লান্ত হয়ে বিশ্রাম নিচ্ছেন এমন সময় হযরত মুসা আঃ ঘুমিয়ে পড়লেন,পাসে ইউসা বসেছিলেন এরমধ্যেই
সেই মাছটি জীবন্ত হয়ে সমুদ্রে নেমে গেলো,
ইউসা সেই ঘটনা টা দেখলো কিন্তু হযরত মুসা আঃ ঘুমিয়ে আছে বিধায় উনাকে জাগ্রত করলেন না, তিনি ইউসা ভাবলেন হযরত নিদ্রাহতে জাগলেই জানাবেন উনাকে,
কিন্তু হযরত মুসা আঃযখন জাগ্রত হলেন ইউসা ব্যপারটি বলতে ভুলে গেলেন, এবং উনারা আবার পথ চলতে লাগলেন,কিছু পথ যাওয়ার পর হযরত মুসা আঃ
ইউসাকে মাছটির কথা জিজ্ঞেস করলেন তখন তার মাছটির কথা মনে পড়লো এবং সে বিস্তারিত বললো,
তখন তারা আবার ফিরে এলো সেই স্থানে এবং আসার পর মাছটি কে অনুসরণ করতে লাগলেন
সমুদ্রের মাঝে রাস্তা তৈরি হয়ে গেলো উনারা সেই পথ দিয়ে গেলেন এবং কিছুদুর যাওয়ার পর দেখতে পেলেন এক জন ব্যাক্তি কালো কম্বল গায়ে শুয়ে আছেন, হযরত মুসা আঃ এর বুঝতে আর বাকি নেই যে ইনিই খিজির আঃ এবং মুসা আঃ উনাকে সালাম দিলেন
হযরত খিজির উত্তর দিলেন এবং মুসা আঃ এর নাম বললেন, হযরত মুসা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন আপনি আমার নাম জানলেন কি করে?
হযরত খিজির আঃ বলেন আপনি যার কাছে আমার নাম ঠিকানা জেনেছেন।
কিছুক্ষণ দুজনের মধ্যে কথা হওয়ার পর মুসা আঃ
খিজির আঃ কে বললেন আমি কিছুদিন আপনার সাথে থেকে জ্ঞান অর্জন করতে চায়,
খিজির আঃ বললেন আপনি পারবেন না আমার কাজে ধৈর্য ধারণ করতে।
খিজির আঃ মুসা আঃ কে বললেন আপনি প্রতিশ্রুতি দেন যে আমার কোন কাজে আপনি বাধা দিবেন না এবং প্রশ্ন করবেন না, মুসা আঃ খিজির আঃ কে প্রতিশ্রুতি দিলেন
এবং উনারা বেরিয়ে পড়লেন সাগরের পাড় ধরে।
কিছুদুর যাওয়ার পর খিজির আঃ মুসা আঃ কে বললেন আপনার সঙ্গী কে বিদায় দিয়ে দিন মুসা আঃ উনার কথা মতো ইউসাকে বিদায় দেন।
উনারা দুজন হাটতে,হাটতে একটি নদীর পাড়ে এসে দাড়ালেন
এবং এক জন মাঝিকে দেখলেন নৌকা বায়ছেন খিজির আঃ হাতের ঈশারাতে ডাকলেন এবং মাঝিকে বললেন আমাদেরকে পার করে দাও, মাঝি উনাদেরকে পার করে দিলেন, পার হওয়ার পর খিজির আঃ পা দিয়ে নৌকার তক্তা ভেঙে দিলেন, তখন মুসা আঃ বলে উঠলেন জনাব আপনার এই কাজটি কিন্তু আপত্তিকর
অন্যায় একটি কাজ,
খিজির আঃ তখন মুসা আঃ কে বলেন আমি তো আগেই বলেছি আপনি আমার সাথে ধৈর্য রাখতে পারবেন না, আপনি কিন্তু আপনার প্রতিশ্রুতি ভংগ করলেন, মুসা আঃ বললেন আমার স্বরন ছিলো না,
এবং এটিকে হাল্কা ভাবে প্রথম ত্রুটি হিসাবে ক্ষমার চোখে দেখবেন।
এই বলে উনারা আবার চলা শুরু করেন এবং এক লোকালয়ে এসে পৌছালেন সেখানে কিছু বালক খেলা করছিলো সবচেয়ে সুন্দর বালকটিকে খিজির আঃ এক আছাড়ে মেরে ফেললো,
খিজির আঃ এই কাজটি মুসা আঃ এর নীতির বাহিরে ছিলো এটি মুসা আঃ মেনে নিতে পারলো না তাই তিনি আবারো প্রতিবাদ করে উঠলেন,
কেনো খিজির আঃ এই চরম অন্যায় করলেন জানতে চাইলেন।
খিজির আঃ মুসা আঃ কে বললেন আমি আগেই তো বলেছি আমার সাথে থেকে আপনি ধৈর্য ধারণ করতে পারবেন না, আপনি আপনার জাগাতে জান আপনি দ্বিতীয় বারের মতো প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন।
মুসা আঃ শেষবার আর একটি সুযোগ চাইলেন, এবং নতুন করে আবার প্রতিশ্রুতি দিলেন।
উনারা আবার পথচলতে থাকেন উনাদের ক্ষুধা অনুভব হয় তাই উনারা পর পর কয়এক বাড়িতে কিছু খাবার চাইলেন কিন্তু সবাই উনাদের কে ফিরিয়ে দেন, এবং উনারা চলে গেলেন গ্রামের শেষপ্রান্তে এসে উনারা একটি ভাংগা প্রাচীর দেখলেন এবং খিজির আঃ মেরামত করা শুরু করে দিলেন,
এতে মুসা আঃ বিরক্ত হয়ে বললেন যে গ্রামের লোকেরা আমাদের কে সামান্য খাবার ও পানি টুকুদিলো না, সেখানে বিনাপারিশ্রমিকে কোন উদ্দেশ্যে আপনি এই কাজটি করছেন?
আমরা তো একাজটি পারিশ্রমিকের বিনিময়ে করতে পারতাম অন্তত কিছু খাবারতো পেতাম, আপনার এমন সব কাজের কোন মানে তো আমি খুজে পাচ্ছি না।
হযরত খিজির আঃ এবার বললেন এখন আর আমরা এক সাথে থাকতে পারবো না আমি জানতাম আপনি এমনটি করবেন, আপনি চলে যান আপনার জাগাতে,
মুসা আঃ তখন বললেন ঠিক আছে কিন্তু আপনার এই কাজ গুলির ব্যাখ্যা দয়া করে জানাবেন……..
খিজির আঃ তখন বললেন ঠিক আছে শুনুন তবে
১. নৌকাটি ছিলো অতি দরীদ্র ধার্মিক ব্যাক্তির যার এটি ছাড়া আর কিছুই ছিলো না, এবং সেটা নতুন, কিন্তু এই রাজ্যের রাজা নিখুত নৌকা গুলি নিয়ে যুদ্ধের কাজে ব্যাবহার করে, মাঝি একটু মেরামত করে নিলেই নৌকাটি বেচে যাবে।
২. বালকটির মধ্যো আমি নাস্তিকতা কুফরি কাজের বীজ দেখতে পাই যদিও তার পিতা মাতা ধার্মিক,বালকটি বড় হয়ে অন্যায় অবিচার করতো, নিজে তো পাপ করতোই পিতা মাতা কেও পাপী বানাতো।
৩.প্রাচির টি ছিলো দুই এয়াতিমের যার পিতা মাতা অত্যান্ত ধার্মিক ছিলো, এবং তাদের পিতামাতা কিছু ধন সম্পদ সেই প্রাচীরের মধ্যে রেখে গেছে যেনো সন্তান রা বড় হয়ে কাজে লাগাতে পারে কিন্তু প্রাচীরটি যায় যায় অবস্থা এখন যদি ধন সম্পদ বেরিয়ে পড়ে সেটা অপরের হাতে চলে যাবে এয়াতিমদের কোন কাজে আসবে না।
তাই আমি