কবিতাই তাঁর জীবন ও জীবিকার অবলম্বন। তিনি এখন ক্ষতবিক্ষত শরীরে হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার চারণকবি রাধাপদ রায়ের (বয়স ৮০) দিন কাটে নিজ গ্রামসহ আশপাশের এলাকার মানুষকে স্বরচিত কবিতা শুনিয়ে। তিনি স্বভাবকবি, কবিতা লেখেন, গান রচনা করেন আর তা ফেরি করে শোনান গ্রামগঞ্জের মানুষকে। সমাজের নানা অসংগতি, অনাচার তাঁর কবিতায় তুলে ধরেন তিনি, কখনো কখনো গল্পের আসর জমান। এতে লোকজন খুশি হয়ে তাঁকে কিছু অর্থ দেন। তা দিয়েই অন্নের সংস্থান হয় তাঁর।
এমন নির্বিবাদী, বয়স্ক এ মানুষটির ওপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে স্থানীয় দুই দুর্বৃত্ত। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, প্রায় একমাস আগে একটি শালিশ বৈঠকে আসামিদের সঙ্গে কথা কাটাকাটির জের ধরে গত শনিবার পথরোধ করে রাধাপদ রায়ের ওপর বর্বরোচিত আক্রমণ চালায় মো. রফিকুল ইসলাম ও কদুর আলী নামে দুই হিংস্র জানোয়ার।
রাধাপদ রায় ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘কদু ও রফিক গান-বাজনা পছন্দ করে না।’ ঘটনার প্রত্যক্ষর্দীরাও বলেছে, ‘আসামিরা গান-বাজনার সংস্কৃতির বিরোধিতা করে।’
রাধাপদ রায়ের ছেলে জুগল রায় বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে আমার বাবার ওপর হামলা চালায় রফিকুল ইসলাম ও কদুর আলী। পরে বাবাকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। আমার বৃদ্ধ বাবাকে তারা যেভাবে মারছে, তা বলে শেষ করতে পারবো না।’
চারণকবি রাধাপদ রায়ের ওপর বর্বরোচিত হামলায় আমরা সংক্ষু্দ্ধ। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। অন্যায় করে অপরাধীরা পার পায় বলেই দুষ্কৃতিকারীদের দুঃসাহস দিন দিন বেড়েই চলেছে। দেশের মানুষ বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে মুক্তি পাক। সরকার, প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিক। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, আমরা একটা মানুষের রাষ্ট্রে বাস করি, অমানুষের না।