সত্যের খোঁজে আমরা
শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি।
শরীয়তপুর জেলার আমিন মোহাম্মাদ জিতু নামে স্থানীয় এক ফোটোগ্রাফারের প্রেমের প্রতারণায় নাট্যকর্মী হিসেবে একই জেলার জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক সংগঠন “অঙ্কুর থিয়েটার” এর অন্যতম সদস্য এবং নিয়মিত অভিনেত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা নামে এক নারী সাংবাদিক আত্মহত্যা করেছেন। তিনি স্থানীয় একটি সংবাদ মাধ্যমের সংবাদ পাঠিকা হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি একটি অনলাইন পোর্টালে সাংবাদিকতা করতেন।
বৃহস্পতিবার (২৬-অক্টোবর) দুপুরে জাজিরা পৌরসভার দক্ষিণ খোশাল শিকদার কান্দি অবস্থিত নীলার নিজ বাড়িতে থাকা বসত ঘরে তার নিজের বেডরুমে একটি সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না দিয়ে ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন নীলা।
এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অভিযুক্ত আমিন মোহাম্মাদ জিতুসহ অজ্ঞাত ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে জাজিরা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন নীলার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার আব্দুল মান্নান খান।
নীলার পরিবার এবং মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, থিয়েটারের কাজসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে নীলার প্রায় নিয়মিত শরীয়তপুর সদরে যাতায়াত করার ফলে শরীয়তপুর সদরের পালং থানাধীন নিরালা গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে আমিন মোহাম্মাদ জিতুর পরিচয় হয় এবং এক পর্যায়ে তা প্রেমের সম্পর্কে রূপ নেয়। এরই প্রেক্ষিতে প্রায়সই জিতু তার কাছে নীলাকে ডেকে নিয়ে যেতো। এছাড়া প্রেমের প্রলোভন দেখিয়ে নীলার সাথে বহুবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনেরও অভিযোগ রয়েছে জিতুর বিরুদ্ধে।
সবশেষ গত (২৪-অক্টোবর) দুপুরে নীলাকে শরীয়তপুরে ডেকে নিয়ে যায় আমিন মোহাম্মদ জিতু।একদিন পরে (২৫-অক্টোবর) রাত ১০ টার দিকে নীলা বাড়িতে ফিরে আসলেও কারও সাথে কোন কথা বলেনি কিংবা খাবারও খায়নি। পরদিন সকালে নীলার পরিবার তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে সে জানায় জিতু তাকে বিয়ের কথা বলে শরীয়তপুর নিয়ে বিয়ে না করে অপবাদ দিয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয়। যার ফলে, একইদিন দুপুরে বিশ্রাম নেওয়ার কথা বলে নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিয়ে আত্মহত্যা করে নীলা।
বিষয়টি নিয়ে নীলার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার আব্দুল মান্নান খান বলেন, আমার মেয়েকে জিতু বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করেছে। বিয়ে না করে উল্টো আত্মহত্যার প্ররোচনা দিয়েছে। আমি বিচারের আশায় থানায় মামলা দায়ের করেছি হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। তবে বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত আমিন মোহাম্মাদ জিতুর সাথে বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা নামে একটি মেয়ের আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। নীলার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কোনো আসামী গ্রেফতার করা যায়নি, তবে আসামী গ্রেফতার করার জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় যেকোনো আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি জানান।