দিনাজপুর প্রতিনিধি
মোঃ ওয়াজ কুরনী
মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র একমাস। প্রতিবছর কোরবানির পশুর মাংস রাখার জন্য ফ্রিজ কেনার হিড়িক পড়ে। কিন্তু এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। দিনাজপুরে এবারও ফ্রিজের চাহিদা বেড়েছে। তবে, এই অঞ্চলের কৃষকের সংখ্যা বেশি। তারা বলছেন, এখনো মাঠে ধান। সেই ধান কাটা শেষ করে বিক্রি করতে পারলেই তবে তাদের হাতে টাকা আসেছে। এর আগে ফ্রিজ কেনা নিয়ে তাদের ভেতর অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে।
বিরামপুর উপজেলার নাওভাঙ্গা গ্রামের মো. লিয়াকত আলী বলেন, ‘ভেবেছিলাম এবার কোরবানির ঈদের আগে একটা ফ্রিজ কিনবো। কিন্তু এখনো ধান কাটা শেষ হয়নি। তাই ফ্রিজ কেনার ইচ্ছে থাকলেও কিনতে পারছি না। তবে শেষ পর্যন্ত কী হয়, বলতে পারছি না।’
লিয়াকত আলী আরও বলেন, ‘কিছু ধান কাটা হয়েছে। কিন্তু দুই ছেলে-মেয়ের কলেজে ভর্তির টাকা জমা রেখেছি। আর যে ধান মাঠে আছে । মনে হচ্ছে না সেগুলো ঈদের আগে কাটা সম্ভব হবে। তারপরও ইচ্ছে আছে, কিছু টাকা জমা দিয়ে কিস্তিতে হলেও একটি ফ্রিজ কিনবো। পরে ধীরে ধীরে কিস্তি পরিশোধ করবো।’
আরেক ক্রেতা হিলির বৈগ্রামের মো. হাসমত আলী বলেন, ‘কিস্তিতে একটি দেশি ব্র্যান্ডের ফ্রিজ কিনেছি। সামনে কোরবানির ঈদ। তাই কোরবানির পশুর মাংস রাখার জন্য একটু কষ্ট হলেও ফ্রিজটি কিনলাম।’
হাসমত আলী আরও বলেন, ‘ফ্রিজ দোকানি বলেছেন, ৩ মাসের মধ্যে টাকা পরিশোধ করতে পারলে অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে না। আর ৩ মাস পার হলে নির্ধারিত দামের চেয়ে কিছু টাকা বেশি দিতে হবে।’
একটি ইলেক্ট্রনিক্স ব্র্যান্ডের শো-রুমের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন মো. শাহিন হোসেন। তিনি বলেন, ‘গেলো বছর ভালোই ফ্রিজ বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু এবার বিক্রি নেই বললেই চলে। কোনো দিন একটি আবার কোনো দিন একটি ফ্রিজও বিক্রি হচ্ছে না।’
শাহিন হোসেন আরও বলেন, ‘এখনো তো কোরবানি ঈদের প্রায় মাস খানেক বাকি আছে। কৃষকের ধান কাটাও শেষ হয়নি। আশা করছি, হয়তো আর কয়েকদিন পরে ফ্রিজ বিক্রির চাপ একটু বাড়তে পারে।’