খাগড়াছড়িতে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা, ফের ১৪৪ ধারা জারি

খাগড়াছড়িতে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা, ফের ১৪৪ ধারা জারি

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

খাগড়াছড়ি জেলা সদরের টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইন্সট্রাক্টর (বিল্ডিং মেইনটেন্যান্স) ও বিভাগীয় প্রধান শিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে পাহাড়ি ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে।

০১ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুর ১টায় এ ঘটনা ঘটে, পরে পাহাড়ি বাঙালি দুপক্ষের সংঘর্ষ মূহুর্তে ছড়িয়ে পড়েছে পুরো শহরজুড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে খাগড়াছড়ি উপজেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বাতেন মৃধা জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই শিক্ষক সোহেল রানাকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিল পাহাড়ি ছাত্রছাত্রীরা। কয়েক বছর আগে সোহেল রানার বিরুদ্ধে এক পাহাড়ি ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা করেছিলো।

পরে ওই ছাত্রী আদালতে এসে সাক্ষ্য দেয় এটি একটি মিথ্যা অভিযোগ তিনি কোনো ধর্ষণের শিকার হননি। পাহাড়ি সংগঠনের একটি মহলের চাপে মামলা করেছে মর্মে সাক্ষ্য দিলে সোহেল রানা খালাস পান এবং পুনরায় তিনি চাকরিতে যোগদান করেন।

সোহেল রানা চাকরিতে যোগদানের পর থেকে পাহাড়ি ছাত্ররা তার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি সহ নানান অভিযোগ এনে প্রত্যাহার দাবি করে আসছিল। আজ ওই শিক্ষক বিদ্যালয় আসলে ত্রিপুরা এক ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ এনে হত্যা করে শিক্ষক সোহেল রানাকে।

জানা যায় পাহাড়িদের প্রতিবাদের মুখে আজ বিদ্যালয় থেকে রিলিজ অর্ডার নিতে এসেছিলেন শিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানা। কিন্তু তাকে সেই সুযোগ দেওয়া হলো না।

এদিকে শিক্ষককে হত্যার প্রতিবাদে পাহাড়ি ও বাঙালি ছাত্রদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ভাঙচুর হয়েছে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিভিন্ন কক্ষ ও আসবাবপত্র। আহত হয়েছেন ১৫-২০ জন। নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার দাবি করলেও পুরো শহরজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

আরো জানা গেছে, গত ২০২১ সালে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ সাজাপ্রাপ্ত হয় এই শিক্ষক। সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পরে জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারও উক্ত স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন শিক্ষক সেহেল রানা।

সে প্রতিবাদে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ ও অভিযোগ করার পরেও কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেয়নি।
যা গত ৫ই সেপ্টেম্বর কলেজের শিক্ষার্থীরা বরখাস্তের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ করে আসছে।

উল্লেখ্য, গত ১৮ সেপ্টেম্বর ভোরে চোর সন্দেহে খাগড়াছড়িতে মামুন (৩০) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে অশান্ত হয়ে ওঠে পাহাড় জেলা। যার জেরে পরবর্তীতে পার্বত্য চট্টগ্রামের দুই জেলায় (খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি)
১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *